এখানে মা পূজিত হন ঘরের মেয়ে হিসেবে, পুজো হয় চারদিন ধরে

এখানে মা পূজিত হন ঘরের মেয়ে হিসেবে, পুজো হয় চারদিন ধরে

বিষ্ণুপুর: মা এখানে অসুরদলনী নন, নন সিংহবাহিনীও। এখানে তিনি ঘরের মেয়ে উমা। লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ আর শিব সহ দুর্গা সপরিবারে পূজিতা হন এখানে৷ শারদীয়া দুর্গোৎসবের মতোই এই সময় এখানে টানা চার দিন পুজো হয়। শুরুর দিন চাল কুমড়ো বলি প্রথাও চালু আছে রক্ষিত বাড়ির শিব-দুর্গার পুজোতে।

এই পুজো শুরুর ইতিহাসের সন্ধান করতে গিয়ে রক্ষিত পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় দু’শো বছর আগে তাঁদের বংশের কোন এক সদস্যাকে দেবী দুর্গা স্বপ্নাদেশ দেন। যেখানে দেবী দুর্গা, শিব সহ লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের মূর্তি তৈরী করে পুজোর নির্দেশ পান। যেহেতু তিনি কালী পুজোর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, সেকারণে কালী পুজোর দিন থেকেই চার দিনের এই দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। এই পুজোতে খুশি বাড়ির সবাই।

 এই সময় বাড়ির মেয়েরা পুজো কাটাতে বাড়ি ফেরেন৷ শ্বশুর বাড়িতে সবার সঙ্গে শারদোৎসবের দিন গুলি আনন্দে কাটানোর পর বাপের বাড়িতে এসে আবারও একটা দুর্গাপুজোর আনন্দ উপভোগের সুযোগ। এযেন তাদের একটা অন্যরকম পাওনা। পুজোর দিন গুলিতে আত্মীয় স্বজন থেকে পাড়া প্রতিবেশী সকলেই হাজির হয়ে সমানভাবে আনন্দ করেন।

রক্ষিত পরিবারের সদস্য রাম প্রসাদ রক্ষিত, মিনতি রক্ষিতরা বলেন, দেড়শো বছর আগে আমাদের বংশের এক গৃহকত্রীকে দেবী দুর্গা স্বপ্ন দেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু হয়। সেই প্রথা সমানে চলে আসছে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পুজো হলেও দুর্গা পুজার নিয়ম নীতি মেনেই পুজা হয়। হোম, যজ্ঞ, বলিদান, চণ্ডীপাঠ বাদ যায় না কিছুই।

টানা চার দিন সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমীর পুজো শেষে সপ্তাহের শনি, রবিবার বাদ দিয়ে ঘট বিসর্জন হয়। বিষ্ণুপুরের এই দুর্গাপুজাকে ঘিরে রক্ষিত পরিবারের সদস্যরা যে যেখানেই থাকুন না কেন বাড়িতে আসেন। পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে পুজোর চারটে দিন আনন্দ ভাগ করে নেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *