নদীয়া: উল্টোরথের দিন পাটে সিঁদুর দিয়ে দেবী প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। চতুর্থীতে পাটে ওঠেন ‘বুড়ো মা’। পঞ্চমীতে মাকে গহনা পরানোর পর ষষ্ঠী থেকে শুরু হয় পুরোদমে পুজো। নয় রকমের ভাজার সঙ্গে প্রতিদিনই মাকে নিবেদন করা হয় বিভিন্ন রকমের ভোগ। প্রতিদিনই বুড়ো মা পূজোয় উপস্থিত থাকে হাজার হাজার মানুষ। তাঁর ভক্তরা দুর্গাপুজোর সময় এখানে আসেন দেশ-বিদেশ থেকে।
জাগ্রত দেবীর কাছে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হলে ভক্তরা দেবীর সামনে ধুনো জ্বালায়। প্রাচীন প্রথা মেনে অহংকার নিবৃত্ত করার জন্য নবমীর দিন হয় “কাদা খেলা”। দশমীর দিন প্রান্ত ভোগ,কচুর শাক আর কলার বড়া খেয়ে”বুড়ো মা”এক বছরের জন্য বিদায় নেন।কিন্তু লক্ষ লক্ষ ভক্তের মনে সারা বছর বিরাজ করেন দেবী দুর্গারূপী মা ‘বুড়ো মা’।
রানাঘাটের বনেদি বাড়ির দুর্গা পুজো গুলির মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুর্গাপুজো রানাঘাট শর্মা বাড়ির দুর্গাপুজো। শর্মা বাড়ির দুর্গাপুজো ‘বুড়ো মা’ খ্যাত। ৭৫৯ বছরের প্রাচীন এই ‘বুড়ো মা’ পুজো। ১২৬২ খ্রিস্টাব্দে এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন রামকুমার চক্রবর্তী। তিনি দেবী দুর্গার সেবক ছিলেন। তিনি নিজে দুর্গাপুজো করতেন। সেবছর রামকুমার চক্রবর্তী পদব্রজে রাঢ়বঙ্গ ভ্রমণে বেরিয়ে ছিলেন। ভ্রমণে বেরিয়ে যখন তিনি ফিরছিলেন সেই সময় তিনি অধুনা ব্রহ্মডাঙ্গা বর্তমান রানাঘাটে পৌঁছন।
তখন তিনি দেখেন শরতের আকাশে মায়ের আগমনী সুর বেজে উঠেছে। দুর্গা পুজোর সময় হয়েছে।কথিত আছে সেই সময় মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি পাঁচ বাড়ি ভিক্ষা করে রানাঘাটে দুর্গা পুজো করেন। সেই থেকেই মাদুর্গা রানাঘাটে “বুড়ো মা” নামে পূজিত হয়ে আসছেন। শোনা যায় নদীয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এই পুজো ব্যাপ্তি লাভ করে৷