গণপতির শুঁড় কোন দিকে থাকলে তা বেশি শুভ? কী বলছে শাস্ত্র

গণপতির শুঁড় কোন দিকে থাকলে তা বেশি শুভ? কী বলছে শাস্ত্র

কলকাতা: শিব-পার্বতী পুত্র গজানন হলেন সিদ্ধিদাতা৷ তিনিই সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের সর্বোচ্চ দেবতা৷ তাঁর নাম স্মরণে যাত্রা শুভ হয়, কার্যসিদ্ধি ঘটে, বাধা-বিঘ্ন দূর হয়। কিন্তু জ্যোতিষ ও বাস্তুশাস্ত্র মতে সব গণেশ মূর্তি সমান ফলদায়ী নয়। শাস্ত্রে বলা হয়, গণপতি মূর্তির শুঁড় যদি বাম দিকে ঘোরানে থাকে, তাহলে সেই মূর্তিকে সবথেকে শুভ বলে বিবেচনা করা হয়৷ এই মূর্তি গৃহস্থে থাকলে সর্বকাজে সিদ্ধলাভ করা যায়৷ 
এই মূর্তির রহস্য কি? 

আরও পড়ুন- এই ২ বাস্তুমতে আসে অর্থ ও সৌভাগ্য, তুষ্ট হন দেবীলক্ষ্মী ও গজানন

পুরাণে বলা হয়েছে, প্রভু শ্রী গণেশের জন্ম হয়েছিল মাতা পার্বতীর একক ইচ্ছায়৷ তাঁর জন্মে শিবের কোনও ভূমিকা ছিল না৷ একদিন দেবী পার্বতীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন শিব৷ সেই সময় স্নানকক্ষে ছিলেন পার্বতী৷ বাইরে দ্বার পাহারার দায়িত্ব দিয়েছিলেন পুত্র গণেশের উপরে৷ শিব দেবী পার্বতীর স্নানকক্ষে প্রবেশ করতে চাইলে মাতার আদেশ মেনে তাতে বাধা দেন গণেশ৷ বাধা পেয়েই ক্রোধান্বিত হয়ে পড়েন মহেশ্বর৷ যুদ্ধ শুরু করেন নিজ পুত্রের সঙ্গে৷ ওই যুদ্ধেই তাঁর মস্তকছেদন করেন শিব৷ পরে তাঁকে বাঁচাতে হস্তিমুণ্ড স্থাপন করে পার্বতীর রোষ থেকে মুক্ত হন মহেশ্বর৷ 

আরও পড়ুন- লাড্ডু বা মোদক শুধু নয়, এই ফল নিবেদনেও মেলে গণেশের আশীর্বাদ

পুরাণ মতে, শিব বরাবরই সংসারের প্রতি উদাসীন৷ আর মাতা পার্বতী হলেন স্বয়ং অন্নপূর্ণ৷ গণেশের দেহ তাঁর মায়ের আর মস্তক তথা চেতনা তাঁর পিতার দান৷ তাই গজাননের মধ্যে বাবা-মা উভয়ের গুণেরই সমহার ঘটেছে৷ মূর্তি তত্ত্ব বলছে, পার্বতীর অধিষ্ঠান মহেশ্বরের বাম দিকে৷ তিনি ‘বামিনী’ নামেও পরিচিত৷ আর গণেশের স্থান শিব-পার্বতীর ঠিক মধ্যিখানে৷ বলা হয়, গজাননের শুঁড় যদি ডান দিকে কুণ্ডলী পাঁকানো থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে তিনি শিবের মতোই উদাসীন৷  তাঁর সেই মূর্তি হয়ে উঠবে ঔদাসিন্যের প্রতীক৷ আর তাঁর শুঁড় যদি বাম দিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকে, তবে ধরা হবে তিনি মা পার্বতীর গুণাবলির দিকে ধাবিত। অর্থাৎ তাঁর বামাবর্ত শুঁড়ের মূর্তি গৃহে থাকলে, ঘরে সুখ-শান্তি বিরাজ করবে৷ সমস্ত কাজে সিদ্ধিলাভ হবে৷ তাই গৃহস্থের আসনে বামাবর্ত শুঁড়বিশিষ্ট গণেশ মূর্তি রাখাই শুভ বলে গণ্য করা হয়৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − twelve =