জলপাইগুড়ি: বিধানসভা ভোটের আগে ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব৷ বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলায় বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিলেন দলের প্রাক্তন সাংসদ বিজয় চন্দ্র৷ কিন্তু সেই অনুষ্ঠান এড়িয়ে গেলেন জেলার ছয় বিধায়কের মধ্যে পাঁচ জনই৷ ভোটের আগে গোষ্ঠী কোন্দলে অশনিসংকেত দেখছে তৃণমূলের একাংশ৷
আরও পড়ুন- বাজি পোড়ালেই হতে পারে ৫ বছরের জেল, ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা
ওই দিন দলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান এড়িয়ে যান তৃণমূলের ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায়, ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারি, মালবাজারের বুলু চিকবারিক এবং নাগরাকাটার শুক্র টোপ্পো (মুন্ডা)৷ আর্ট গ্যালারিতে দেখা যায়নি একাধিক ব্লক প্রেসিডেন্ট, পঞ্চায়েত সভাপতি এবং জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলরকে৷ অনুপস্থিত ছিলেন দলের যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ও৷ বৃহস্পতিবার ওই অনুষ্ঠানে একমাত্র উপস্থিত ছিলেন রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী৷ ফলে ফাঁকা থেকে যায় অর্ধেক দর্শকাসন৷ দলীয় কর্মীদের এহেন আচরণে নিজের ‘বিরক্তি’ চেপে রাখতে পারেননি খগেন্দ্র রায়৷ তিনি বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি জেলায় দলের ছয় জন বিধায়ক রয়েছি আমরা৷ অথচ আমি একা এখানে উপস্থিত হয়েছি৷ বাকিরা কোথায় গেলেন? ব্লক প্রেসিডেন্ট এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা গেলেন কোথায়?’’
অন্যদিকে তাঁদের অনুপস্থিতির কারণ দর্শিয়ে নাগরাকাটার বিধায়ক টোপ্পো বলেন, ‘‘আমি এবং মালবাজার ও ময়নাগুড়ির বিধায়ক কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলাম৷ বৃহস্পতিবার রাতে আমরা জলপাইগুড়ি পৌঁছাই৷ সেই কারণেই বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারিনি৷’’ তবে তাঁদের এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ জলপাইগুড়ি জেলা নেতৃত্ব৷ জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘রাজগঞ্জের বিধায়কও কলকাতায় বৈঠকে যেগ দিতে গিয়েছিলেন৷ তিনি যদি সময় বার করতে পারেন, তাহলে বাকিরা পারলেন না কেন?’’ এই ঘটনায় তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যানীর কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য জানা যায়নি৷ তবে দলের অন্দরে ফাটল চওড়া হচ্ছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷
আরও পড়ুন- কল্যাণের কুকথা, ক্ষোভ বাড়ছে দলের অন্দরে
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস৷ সাতটির মধ্যে ছ’টি আসনেই জয়ী হয়েছিল দল৷ তবে ২১-এর নির্বাচনের আগে যে ভাবে দলীয় কোন্দলের ছবি প্রকাশ্যে আসছে, তাতে অশনিসংকেত দেখছে ওয়াকিবহাল মহল৷