সরসুনা কলেজে ১৮ লক্ষ টাকা তছরূপের অভিযোগ! দুই অশিক্ষক কর্মী অভিযুক্ত, একজন মহিলা

কলকাতা: বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে জেলে। নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে তিনি জেলবন্দি। দুর্নীতির শিকড় ঠিক কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তা এখনও আন্দাজ পাওয়া যায়নি। এই সময়ই এবার সামনে এল কলেজ দুর্নীতির ঘটনা। সেটা কোথায়, না সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা এলাকাতেই! আর্থিক তছরূপের ঘটনা ঘটেছে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সরসুনা কলেজে। অভিযুক্ত ওই কলেজের দুই অশিক্ষক কর্মী। তাদের মধ্যে একজন আবার মহিলা।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, অশিক্ষক দুই কর্মীদের মধ্যে একজন মহিলা এবং একজন পুরুষ, তিনি আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় 'ঘনিষ্ঠ'। দুজনের বিরুদ্ধেই টাকা তছরূপের অভিযোগ উঠেছে। দাবি করা হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই কাজ করেছেন তারা এবং কলেজ ফান্ডের ১৮ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে দুই অভিযুক্তর মধ্যে একজন লাইব্রেরিয়ান অমিত মুখোপাধ্যায় এবং অন্যজন কলেজের এক কর্মী মৌ বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে অমিত এলাকার যুব তৃণমূল ব্লক সভাপতি ছিলেন। এরপর কলেজের অ্যাকাউন্টসের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যেই কলেজে চাকরি পান অমিত। কানাঘুষো যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাতেই তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল এবং তাঁকেই অ্যাকাউন্টসের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা সিপিএম নেতা এবং কলেজের পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সদস্য নিহার ভক্তের দাবি, ২০১৮-২০২১ এই তিন বছরে কলেজের আয়-ব্যয়ে গরমিল আছে। এই বিষয়ে তারা আইনি পথে যাচ্ছেন এবং আরটিআই করতে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি, কোনও পদক্ষেপ না হলে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হবে। ইতিমধ্যেই এক দফা বৈঠকের পর কলেজের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি অভিযুক্ত অমিত এবং মৌকে সাসপেন্ড করেছে বলে খবর। কিন্তু টাকা ফেরত দিলে চাকরি মিলবে এমন আভাসও আছে। এই নিয়ে ক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এও শোনা গিয়েছে, অভিযুক্ত দুজনে দোষ স্বীকারও করে নিয়েছে।
এলাকার মানুষ এবং স্থানীয় বিরোধী নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছে, চুরি করার পর টাকা ফেরত দিলেই কি সাত খুন মাফ হবে? এটা কখনই চলতে পারে না। গোটা ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছে তারা। সিপিএম নেতা কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, কলেজের অধ্যক্ষও হয়তো এই ঘটনায় জড়িত কারণ তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কলেজের টাকা মানে জনগণের টাকা। তাই যারা অভিযুক্ত তাদের শাস্তি দিতেই হবে।