কলকাতা: জল্পনা ছিল৷ এবার সেই জল্পনায় মাঝে পদত্যাগ করলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মন্ত্রিসভার ৫টি বৈঠকে গরহাজির থেকে এবার মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আজ দুপুরে রাজভবনে গিয়ে তিনি তাঁর পদত্যাগ জমা দেন৷ ইতিমধ্যেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন৷
এর আগেও ঠিক একই ভাবে আচমকা মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও লক্ষ্মীরতন শুক্লা৷ এবার শুভেন্দুর-লক্ষ্মীর দেখানো পথেই আচমকা পদত্যাগ করলেন রাজীব৷ সূত্রের খবর, নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দুঃখপ্রকাশ করে নিয়েছেন রাজীব৷ জানিয়েছেন, তাঁকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্যের মানুষকে পরিষেবা দিতে এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷
প্রায় ১ মাসের মধ্যে ২ মন্ত্রী ও ১ রাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ করলেন৷ মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও তৃণমূল ছাড়বেন কি না, তা আজ দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের অবস্থান জানাবেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যদিও, রাজীবের মান ভাঙতে মাঠে নেমেছিলেন তৃণমূলের প্রথম শ্রেণির নেতারা৷ ময়দানে নেমেছিলেন খোদ প্রশান্ত কিশোর৷ কিন্তু, দলের অন্দরে স্বচ্ছতা নিয়ে বাবরার তুলেছিলেন অভিযোগ৷ এবার সরাসরি মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন রাজীব৷ এর আগে ফেসবুক লাইভে নিজের মনের কথা সকলের সামনে খুলে বলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করে ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে কাজ করতে গিয়ে বাধা আসছে তাঁর চলার পথে৷ এই নিয়ে নিজের ক্ষোভ জাহির করেন পদত্যাগী বনমন্ত্রী৷
ফেসবুক লাইভে তিনি নিজের ক্ষোভের মাঝেও তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এখনও ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি। আপনাদের জন্য ধৈর্য ধরে রেখেছি৷’’ এবার করলেন পদত্যাগ৷ ফেসবুক লাইভে তিনি আগে জানিয়েছিলেন, ২০২১ সাল গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়ে সমর্থকদের উপর ভরসা রাখার অনুরোধ করেন৷ এর মাধ্যমে কি বোঝাতে চাইলেন বনমন্ত্রী? ফেসবুক লাইভ থেকে কিছুটা অভিমানী সুরে রাজীব বলেন, তাঁর মনের এই ক্ষোভের কথা তিনি কিছু নেতাকে জানালেও তারা সেই কথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন৷ এরপর তিনি বলেন, ‘‘এটাই আমাকে দুঃখ দেয়৷’’ এছাড়াও দলীয় কার্যকলাপের মধ্যে স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ডোমজুড়ের বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি কী করতে চাইছি, কী বলতে চাইছে, কোনও কিছু বলতে পারব না আমি? গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা। স্বাধীনভাবে চলতে চাই। আমার দুঃখ, যখন সত্যিকারের ভাল কাজ করার চেষ্টা করছি, কতিপয় কিছু নেতা এটার অপব্যাখ্যা করেন, এটাই কষ্ট লাগে৷’’ ওই লাইভে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দলের মধ্যে কর্মীদের সম্মান থাকাটা খুব জরুরি। এই প্রসঙ্গে তিনিও তার নিচুতলার কর্মীদের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘আমার কর্মীদের হতাশা আমি বুঝি৷ কর্মীরা শুধু একটু সম্মান চান৷ কেউ বলতে পারবে, কোনও কর্মী আমার থেকে দুর্বব্যহার পেয়েছে? কর্মীদের জন্যই সবকিছু৷’’