জ্বলছে শুশুনিয়া, পুড়ছে বন্যপ্রাণ, সঙ্কটে স্থানীয়রা! নেপথ্যে কী?

জ্বলছে শুশুনিয়া, পুড়ছে বন্যপ্রাণ, সঙ্কটে স্থানীয়রা! নেপথ্যে কী?

বাঁকুড়া: প্রকৃতির প্রতি মানুষ কতটা দায়বদ্ধ? আদৌ কি দায়বদ্ধ? এই নিয়ে তর্জা নতুন নয়। তবে ঘুরেফিরেই উঠছে এই প্রশ্ন। মঙ্গলবার থেকেই জ্বলছে শুশুনিয়া পাহাড়। দমকল সাময়িক নিয়ন্ত্রণে আনলেও ফের দাউ দাউ করে জ্বলছে জঙ্গল। কেউ বলছেন, ইচ্ছাকৃত আগুনের তত্ত্ব, কেউ আবার শিকার উৎসবের তত্ত্ব। সবকিছুর মধ্যে একমাত্র সত্যি হল, পুড়ছে এই রাজ্যেরই অন্তর্গত শুশুনিয়া পাহাড়। গাছপালার সঙ্গে পুড়ছে বণ্যপ্রাণীও।

এক বছরও ঘোরেনি, সংবাদের শিরোনামে এসেছিল অ্যামাজন জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অরণ্যভূমির, পুড়েছে বন্যপ্রাণী। ইউরোপের কোপারনিকাস অ্যাটমস্ফিয়ার মনিটরিং সার্ভিস (ক্যামস) তথ্য দিয়েছিল, এই বিশাল বনভূমিতে লাগা আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে আটলান্টিকের উপকূল পর্যন্ত। কার্বন মনোক্সাইড-সহ নানা ক্ষতিকর রাসায়নিকের তত্ত্বও সামনে এসেছিল সেই সময়। যদিও অ্যামাজনে আগুন লাগার ঘটনা নতুন নয়। এবার কোপ বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ের ওপর।
 

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ওই অরণ্যে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন পৌঁছলে সাময়িক নিয়ন্ত্রণে আসে সেই আগুন। এরপর ওই দিন রাতের দিকে ফের জ্বলে ওঠে জঙ্গল। বুধবার সকালেও দেখা যায় দাউদাউ করে জ্বলছে শুশুনিয়া। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে দিন গুনছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন্যপ্রাণীর তো মৃত্যু ঘটেছেই। পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে অরণ্য। কিন্তু কেন লাগল এই আগুন? কী মনে করছে বন দফতর? আশ্চর্যের বিষয়, এখনও পর্যন্ত তাদের তরফে কোনও সদুত্তরই পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন, কেউ ইচ্ছাকৃত আগুন লাগিয়েছে শুশুনিয়ার জঙ্গলে। একটি সূত্র বলছে, পাহাড়ের শুকনো পাতায় আগুন লেগেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একটি আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে উঠে এসেছে নয়া তত্ত্ব। আদিবাসী এলাকার শিকার উৎসবকেও সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে তারা। তবে প্রকৃত সত্য সন্ধানে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।

রাজ্যের শুশুনিয়া জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা প্রকৃতির প্রতি মানবজাতির উদাসীনতার বিষয়টিকে আরও একবার সামনে আনল। প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। মঙ্গলবার বিকেল থেকে আগুন লাগার ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও বুধবার সকালেও দেখা গেছে সেই দৃশ্য। এই প্রসঙ্গে প্রশাসনের ভূমিকার কথাও উঠছে। অতীতের অ্যামাজনে আগুন লাগানোর ঘটনা তুলে ধরে অনেক বলেন, সেই সময় হ্যাশট্যাগ প্রে ফর অ্যামাজন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে নেটদুনিয়ায় আগুনের যেসব ছবি শেয়ার করা হয়েছিল, তার অনেকগুলিই বহু পুরনো ছবি ছিল। কিছু ছবি তো আদৌ ব্রাজিলেরই নয় বলেও জানিয়েছিল সংবাদসূত্র। আপাতত শুশুনিয়া জঙ্গলে আগুনের ঘটনার নেপথ্যের প্রকৃত সত্য জানতেই আগ্রহী রাজ্যবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × two =