সুন্দরবন: টানা ছয় দিন ধরে নানা ভাবে তাকে বাগে আনার চেষ্টা চলছে৷ কিন্তু কিছুতেই তার জন্য পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে না ডোরাকাটা৷ অবশেষে সুন্দরবনের লোকালয়ে ঢুকে পড়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে খাঁচাবন্দি করতে মঙ্গলবার সকাল থেকে ছোড়া হচ্ছে জলকামান।
আরও পড়ুন- শীতের ইনিংসে ব্রেক! শিলাবৃষ্টির সতর্কতা জারি, কেমন কাটবে নববর্ষ?
ইতিমধ্যেই কুলতলির মেরিগঞ্জ-২ এর শেখপাড়া এলাকা লাগোয়া জঙ্গল জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেছে বন দফতরের কর্মীরা৷ ভিতরে পাতা রয়েছে দুটি লোহার খাঁচা৷ টোপ হিসাবে তাতে রাখা হয়েছে ছাগল৷ অন্যদিকে, গাছের মাথায় মাচা বেধে বন্দুক তাক করে রেখেছেন বনদফতরের কর্মীরা৷ দক্ষিণরায়ের দেখা মিললেই ছোড়া হবে ঘুমপাড়ানি গুলি৷ এককথায় বাঘ ধরতে কোনও কসুরই রাখছে না বন দফতর৷ কিন্তু এর পরেও বাঘ জালে না পড়ায় আজ থেকে শুরু হয়েছে জলকামান ছোড়া৷ সেই সঙ্গে ফাটানো হচ্ছে পটকা৷ কিন্তু কোথায় গেল দক্ষিণরায়? তার দেখা নেই৷
গত বুধবার জঙ্গল থেকে পথ হারিয়ে মৈপীঠে ঢুকে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সেখানে বন দফতরের কর্মীরা তাকে ধরতে গেলে পালিয়ে যায় বাঘটি৷ সেখান থেকে সে চলে আসে কেল্লা এলাকায়৷ বৃহস্পতিবার দর্শন গায়েনের চক এলাকায় চলে আসে বাঘটি। শুক্রবার সেখান থেকে স্থান পরিবর্তন করে চলে আসে ৫ নম্বর গরাণকাটি৷ সেখানে শোনা যায় দক্ষিণরায়ের গর্জন৷ দেখা যায় পায়ের ছাপ৷ শনিবার বিকালে বাঘটি চলে যায় পিয়ালির জঙ্গলে। বড়দিন উপলক্ষে পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছিলেন কেল্লা এলাকায়। সেখানে বনভোজন চলছিল৷ সেই সময় আচমকা শোনা যায় বাঘের গর্জন। এর পরেই জাল দিয়ে জঙ্গল ঘিরে ফেলেন বন দফতরের কর্মীরা। বাঘটিকে চাক্ষুশও করেন গ্রামবাসীরা৷ শনিবার ও রবিবার দুই গিনই কুলতলির মেরিগঞ্জ দুই নম্বর অঞ্চলের ডোঙাজোড়া-মিশ্রচক এলাকার শেখপাড়ায় বাঘের গর্জন শোনার পরেই বন দফতরের আধিকারিকরা জানান, এখানেই লুকিয়ে রয়েছে বাঘটি। চলছে বাঘ ধরার তোড়জোড়৷ সোমবারও দিনভর শোনা গিয়েছে বাঘের গর্জন৷
পিয়ালি নদী লাগোয়া জঙ্গলে তিনটি স্তরে জাল বিছানো হয়েছে। সেই জাল টপকে বাঘটি পালাতে পারেনি বলেই বনকর্মীদের অনুমান৷ জালের পাশাপাশি খাঁচায় রয়েছে ছাগলের টোপ৷ কিন্তু সেই টোপও কাজে লাগছে না৷ বন কর্মীদের অনুমান ভয় পেয়ে বাঘটি জঙ্গলের ভিতরেই ঘাপটি মেরে রয়েছে৷ তাকে জঙ্গল থেকে বার করতে বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে দমকল কর্মীদের ডেকে শুরু হয়েছে জলকামান ছোড়া। নদীর জল ব্যবহার করেই জল ছোড়া হচ্ছে জঙ্গলে। যাতে বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে দক্ষিণরায়৷