কলকাতা: হাওড়া, হুগলি ,পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুর এই চার জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, ১ লক্ষ ১৩ হাজার ১৮১ জন দুর্গত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চার জেলায় এখনও পর্যন্ত ৩৬৫ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এই ত্রাণ শিবির গুলিতে ৪৩ হাজার ১৯২ জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
দুর্যোগে এ পর্যন্ত যে ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন তার মধ্যে দেয়াল ভেঙে ৬ জন ,জলে ডুবে ৭ জন ,বজ্রাঘাতে ৬ জন ,বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। কালিম্পংয়ে ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে আরো দুজনের। রাজ্যের আনুমানিক ৪ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায় ডুবে গেছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে বীজ বপন করা হয়ে গিয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবে জমি থেকে দ্রুত জল না নামলে কৃষি ক্ষেত্রে বড়ো ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কী ভাবে এই ক্ষতি সামলানো যায় তাই নিয়ে দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে আজ একটি উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক করেছেন কৃষি মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়। সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত কোনোও নদী বাঁধ ভাঙেনি। জল নামলেই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতির কাজে নেমে পড়বে তাঁর দপ্তর। তার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন ডিভিসিকে। যদিও সংস্থার দাবি রাজ্যের লিখিত অনুমতি নিয়েই তারা জল ছাড়ে এবং এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখন বর্ষাকাল এবং বর্ষার জন্য সব জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু বন্যা পরিস্থিতি বর্ষার জন্য হয়নি। জল ছাড়া হয়েছে সেই কারণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি এই বন্যা পরিস্থিতিকে man-made বলেও কটাক্ষ করেন। যদিও দামোদর উপত্যকা কর্তৃপক্ষের দাবি, জল ছাড়ার আগে লিখিত অনুমতি নেওয়া হয় এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজ্য সরকারের লিখিত অনুমতি নিয়েই জল ছাড়া হয়েছে। নিম্নচাপের জেরে বাঁধ গুলি জল ধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া জল ছেড়েছে ডিভিসি।