বন্যা বৃত্তান্ত: কোনটা ম্যান মেড? বন্যা, নাকি বন্যার ঘোলা জলে কলুষিত রাজনীতি?

বন্যা বৃত্তান্ত: কোনটা ম্যান মেড? বন্যা, নাকি বন্যার ঘোলা জলে কলুষিত রাজনীতি?

পর্ব ১

দেবময় ঘোষ: প্রসঙ্গ ‘ম্যান মেড বন্যা’। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু দিন থেকেই বলে আসছেন এই কথা। কিন্তু একটা সময় ছিল, যখন তিনি বামফ্রন্ট সরকারকে দোষারোপ করতেন। ঘোর বন্যার সময় রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা খুঁজছেন। এখনও উনি ম্যান মেড বন্যা বলেন – কিন্তু তার সরকারকে দোষ চাপান না। তার সেচ দপ্তর দোষমুক্ত থাকে। প্রশ্ন আসে কোনটা ম্যান মেড? বন্যা, নাকি বন্যার ঘোলা জলে কলুষিত রাজনীতি?

বঙ্গে প্রবল বর্ষণ নতুন নয়। পাশের রাজ্যগুলি থেকে আসা জল রাজ্যের নদ-নদী গুলিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ভয়ঙ্কর করে তোলে – এমন ঘটনাও নতুন নয়। অনেক সময় দেখা যায় রাজ্যে তেমন বৃষ্টিই হয়নি। কিন্তু, পাশের রাজ্য থেকে অতিথি হয়ে এসেছে বন্যা। দক্ষিণবঙ্গ বা উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা করাল বন্যার গ্রাসে চলে গিয়েছে। পরিবেশবিদ তথা নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র যা ব্যাখ্যা করেছেন – “ঐতিহাসিকভাবে বন্যা কিছুটা হলেও ম্যানমেড৷ ব্রিটিশরা তাঁদের রেল ও সড়কপথ রক্ষা করতে বাঁধ দিয়েছিল৷ সেই বাঁধের ফলশ্রুতিতেই নদী ও শাখানদী মজে গেছে৷ তাই সেই অর্থে এই বন্যার কারণ তো মানুষই৷

বাংলার মানুষ বন্যার লাল জলে ভেসে আসা পলির গুরুত্ব বুঝতো৷ তাই দু’দিনের বন্যায় তাদের আপত্তি ছিল না৷ দামোদরের ওই বন্যাই বর্ধমানকে ভারতের সবচেয়ে উর্বর কৃষিক্ষেত্রে পরিণত করেছিল৷ অধিকাংশ ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার বাংলার কৃষির সঙ্গে নদীর এই আন্তঃসম্পর্কের কথা বুঝতে পারেননি৷ স্বাধীনতার পরে আমরা সেই উত্তরাধিকার বহন করে চলেছি৷ (সূত্র – ডয়চে ভেলে ৪.৮.২০১৭ / বন্যা অনেকাংশে ম্যানমেড। তাই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না)।”

ঝাড়খণ্ড সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হলেই মাইথন, পাঞ্চেত, তিলাইয়া, চান্ডিল, গালুডি-সহ বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু হয়। ডুবে যায় হুগলি, হাওড়া, দুই মেদিনীপুর, বর্ধমানের বিভিন্ন অঞ্চল। বাঁকুড়া, বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা চলে যায় জলের তলায়। পুরুলিয়ায় জলাধার উপচে বয়ে যায় জল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *