কলকাতা: বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের আচরণ এবং ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। বিরোধীরা দিনের পর দিন অভিযোগ তুলে এসেছে যে, বীরভূমে সকলে নাকি অনুব্রত মণ্ডলের কন্ট্রোলে থাকে, সেখানে নাকি তিনি শেষ কথা। বিরোধীদের এই মন্তব্যে কার্যত সীলমোহর দিয়েছে খোদ রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের একটি ভিডিও। সেই ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্ল্যাকমেইল করেছেন অনুব্রত মণ্ডল! সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই এখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতিতে।
গত সোমবার কলকাতার বন্দর এলাকার ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি কর্মী সভায় যোগ দেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার দিন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে ছিলেন কিন্তু জানতেন না মইনুদ্দিনের নাম প্রার্থী তালিকায় নেই। তালিকা ঘোষণা হতে তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে এটা কি হল, তখন মমতা বলেন, অনুব্রত তাঁকে ব্লকমেইল করেছে, জবরদস্তি একজনের নাম বাদ দিয়েছে। এক্ষেত্রে তাঁর কিছু করার নেই কারণ তাকে সবটা সামলাতে হচ্ছে এবং সবাইকে রাখতে হচ্ছে, এমনটাই নাকি মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আফসোস পর্যন্ত করেন যে মইনুদ্দিন শুধু নিজের কাজ করতো তাও সে টিকিট পেল না। উল্লেখ্য, নলহাটির বিদায়ী বিধায়ক মইনুদ্দিন শামসকে টিকিট দেওয়া হয়নি। ইনি ফরওয়ার্ড ব্লকের থাকার পর ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তিনি প্রয়াত অভিনেতা কলিমুদ্দিন শামসের ছেলে। মঈনুদ্দিনের ভাই নিজামুদ্দিন ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা। প্রসঙ্গত, ফিরহাদ হাকিমের কর্মীসভার এই বক্তব্যের ভিডিও করেছিলেন স্থানীয় এক কর্মী। সেই ভিডিও পরে শেয়ার করেন নিজামুদ্দিন। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আজ বিকেল।
আরও পড়ুন- নন্দীগ্রাম তাঁকে অনেক দিলেও এখানকার মানুষকে অপমান করেছেন দিদি, তোপ নমোর
তবে এই গোটা ঘটনায় বেশ কয়েকটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। ফিরহাদ হাকিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরুদ্ধে অনুব্রত মণ্ডল ব্লাকমেইল করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন, কি ব্যাপারে সেই ব্ল্যাকমেইল সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। কিছু মাস আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জনসভায় জানিয়েছিলেন যে বিজেপি থেকে নাকি অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করে দলে আসার কথা বলা হচ্ছে। তাহলে কি সেই বিষয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন কেষ্ট? নাকি নিজের এলাকায় প্রতিপত্তি বজায় রাখার জন্য নিজের পছন্দের লোককে প্রার্থী করার জন্য জোর দিয়েছেন তিনি, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।