কলকাতা: মাত্র কয়েকটা সপ্তাহ, তার মধ্যে একে একে তৃণমূল কংগ্রেস দল ছেড়েছেন একাধিক বিধায়ক এবং মন্ত্রী। যাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম শুভেন্দু অধিকারী, সৌমেন্দু অধিকারী, শীলভদ্র দত্ত সহ প্রমুখ। যত নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে ততই যেন অস্বস্তি বাড়ছে রাজ্যের শাসকদলের। তাই এবার কোন ঘটনা ঘটার আগেই যেন শুধরে নেওয়ার চেষ্টা। এবার নজরে রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী সাধন পান্ডে, সতর্কবার্তা এল রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের তরফে। সাধন পাণ্ডে হয়তো একটু ‘বেসুরো’ হচ্ছেন, বুঝতে পেরেই আসরে নামলেন ফিরহাদ হাকিম।
বেশি ওস্তাদি করার দরকার নেই, দলের বাইরে কথা বলার প্রয়োজন নেই! এভাবেই দলের প্রবীণ মন্ত্রী সাধন পাণ্ডেকে সতর্ক বার্তা দিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আসলে, তৃণমূল কংগ্রেসের ২৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডেকে বলতে শোনা যায়, যারা খারাপ, দলের ভালর জন্যই তাদের এক্ষুনি বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত! দলের নানা পদে অনেক খারাপ লোক বসে রয়েছে। মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর এই নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্যের মন্ত্রীর এই মন্তব্য জনসমক্ষে আসার পরেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তাঁকে বার্তা দিয়ে বলেন, যদি কোনো বক্তব্য থাকে তাহলে সেটা দলের অন্দরেই বলা ভালো, বাইরে বলে ওস্তাদি করার দরকার নেই। যদি কোন বক্তব্য থাকে তাহলে সেটা যেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়। কে ভালো আর কে খারাপ সেটা তিনি বিচার করবেন না, আর সংবাদমাধ্যমে বলেও কোনো লাভ নেই। এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন। তবে এই মন্তব্য করে ফিরহাদ হাকিম শুধুমাত্র সাধন পাণ্ডেকে বার্তা দিয়েছেন এমনটা নয়। বিগত কয়েক দিনে যারা দলের বাইরে দল সম্পর্কে নানা বিধ কথা বলছেন তাদেরকেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। ফিরহাদের স্পষ্ট বক্তব্য, দল সম্পর্কিত এই ধরনের মন্তব্য করলে দলের ভাবমূর্তি ছোট হয়। তাই কোন রকম কিছু বলার থাকলে তার দলের অন্দরেই বলা ভালো।
প্রসঙ্গত, নতুন বছরের প্রথম দিনেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী সৌমেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি কাঁথির পুরো প্রশাসক পদ থেকে অপসারিত করা হয় তাঁকে। তারপরে তাঁর বিজেপিতে যোগদান যেন সময়ের অপেক্ষা ছিল। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল নিজের বাড়িতে পদ্ম ফোটাতে। খড়দহের জনসভা থেকে সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন শুভেন্দু। নতুন বছরের প্রথম দিনেই নিজের ভাইকে বিজেপিতে যোগদান করি সেই চ্যালেঞ্জ পূরণ করেছেন তিনি। এদিকে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এখন কার্যত ‘বেসুরো’ হয়েছেন। অধিকারী পরিবারের বাকিরা আদৌ দল বদল করেন কিনা সেদিকে এখন তাকিয়ে থাকতে হবে।