দক্ষিণ ভারতের শিবকাশীর মতো বাংলায় বাজির ক্লাস্টার তৈরি কতটা সম্ভব?

দক্ষিণ ভারতের শিবকাশীর মতো বাংলায় বাজির ক্লাস্টার তৈরি কতটা সম্ভব?

নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের বাংলায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ঝরে গিয়েছে বেশ কয়েকটি তাজা প্রাণ। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে। বিরোধীদের দাবি বাজি নয়, দত্তপুকুরের নীলগঞ্জের ওই বাড়িতে বোমা তৈরি হতো। ঘটনার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেছেন। কীভাবে বেআইনি বাজি কারখানা রাজ্য থেকে চিরতরে বন্ধ করা যায় সেই নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে খবর। উল্লেখ্য এগরার ঘটনার পর রাজ্যের বাজি কারখানাগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ দল তৈরির কথা ঘোষণা করে নবান্ন।

ঠিক হয় তামিলনাড়ুর শিবকাশীর মত পশ্চিমবঙ্গেও বাজির ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। জানা গিয়েছে  সেরকমটা করতে হলে ক্লাস্টার পিছু ছয় একর করে জমির প্রয়োজন হবে। বাজি প্রস্তুতকারকরা যাতে সহজে লাইসেন্স পেয়ে যান তার জন্য সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম করা হবে। সেই সঙ্গে নবান্ন জানায় রাজ্যের সমস্ত বেআইনি বাজি কারখানা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কোথায় কী? ঘটনা হল গোটা দেশের যে বাজির চাহিদা রয়েছে প্রতি বছরে, তার সিংহভাগ জোগান দেয় তামিলনাড়ুর শিবকাশী। অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতভাবে সেখানে বাজি তৈরি হয়। রাতারাতি বাজি তৈরির পরিকাঠামো সেখানে গড়ে ওঠেনি। বহু বছর ধরে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে তামিলনাড়ুর একের পর এক সরকার শিবকাশীতে বাজি তৈরির ব্যবস্থাকে ধারাবাহিকভাবে অত্যাধুনিক করেছে। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে দ্রুততার সঙ্গে বাজি তৈরির ক্লাস্টার গঠন করতে চাইছে, তা কতটা সম্ভব হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ যতদিন না সেই ক্লাস্টার তৈরি হয় ততদিন বাজি তৈরির সঙ্গে যে বা যারা যুক্ত রয়েছেন তাঁদের রোজগার কীভাবে হবে? সেই প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু এটাও ঠিক রাজ্যবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে সমস্ত বেআইনি বাজি কারখানা চিরতরে বন্ধ করতে হবে।

এরপর সরকারি স্তর থেকে লাইসেন্স পাওয়ার পর নতুন করে যে কারখানা তৈরি হবে সেখানে বাজি তৈরি করা যাবে। বলাবাহুল্য সেটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই ইচ্ছা থাকলেও তামিলনাড়ুর মতো অর্গানাইজড বাজির ক্লাস্টার তৈরি করা বেশ কঠিন কাজ। সেক্ষেত্রে যতদিন না বিজ্ঞানসম্মত ভাবে বাজি তৈরির ক্লাস্টার গঠিত হচ্ছে ততদিন সরকার থেকে বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের কোনও আর্থিক সাহায্য করা হবে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। তাই রাতারাতি পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বাজি তৈরির ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কাজটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এই কাজটা সরকারকে যে কোনও মূল্যে করতেই হবে। সকলেই চাইছেন দত্তপুকুরের নীলগঞ্জের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর যেন না হয়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাজি শিল্পকে ঢেলে সাজাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *