রাস্তা এখন নদী! হাঁড়িতে ভাসিয়ে সন্তানকে পোলিয়ো টিকা খাওয়াতে নিয়ে এলেন বাবা

রাস্তা এখন নদী! হাঁড়িতে ভাসিয়ে সন্তানকে পোলিয়ো টিকা খাওয়াতে নিয়ে এলেন বাবা

বারুইপুর:  লাগাতার বৃষ্টিতে কোথাও হাঁটু সমান জল৷ কোথাও আবার ডুবেছে কোমর৷ রাস্তা যেন নদী৷ জলের মাঝে কোনও মতে মাথা তুলে রয়েছে বাড়িগুলি৷ ক্যানিং ২ নম্বর ব্লকের সারেঙ্গাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিংহেশ্বর সাবসেন্টারেও জল থৈ থৈ অবস্থা৷ ঘর বন্দী রয়েছে এলাকার মানুষ৷ এই অবস্থায় রবিবার ছিল পালস পোলিও টিকা৷ সকাল থেকেই বেড়িয়ে পড়েছিলেন ‘আশা দিদি’রা৷  কিন্তু জল ডিঙিয়ে কী ভাবে সদ্যোজাত সন্তানকে পোলিও খাওয়াতে নিয়ে যাবেন তিনি? চিন্তায় পড়েছিলেন সদ্য বাবা হওয়া নিজামুদ্দিন মোল্লা৷ সমস্যা সমাধানে অভিনব উপায় বার করলেন তিনি৷ 

আরও পড়ুন- সংসার ভাঙার চেষ্টা, ব্লেড দিয়ে স্বামীর প্রেমিকাকে চিড়ে দিল বধূ

জল যতই ঘিরে ধরুক সন্তানকে পোলিও খাওয়াতে দেরি করেননি ব্যাগ তৈরির কারিগর নিজামুদ্দিল৷ বড় মুখ ওয়ালা হাড়ির মধ্যে সন্তানকে শুইয়ে ভাসিয়ে নিয়ে আসেন তিনি৷ আড়াই বছরের ছেলে শামিমকে বসিয়ে আনেন সঙ্গীর কাঁধে৷  তিনি বলেন, যতই জল থাকুক বাচ্চা দুটোকে তো পোলিও খাওয়াতেই হবে৷ তাই এ ভাবেই ওদের নিয়ে এলাম৷ তবে নবজাতককে এ ভাবে হাড়ির মধ্যে শুইয়ে পোলিও খাওয়াতে নিয়ে আসতে দেখে হতবাক হয়েছেন আশার দিদিরাও৷ চমকে গিয়েছেন এএনএম (২)এর সদস্যরাও৷ 

আরও পড়ুন- নদীয়ার পর মালদহ, ফের পুলিশের জালে ভুয়ো পরীক্ষার্থী

গতকাল হাঁটুজল পেরিয়েই বাচ্চাদের পোলিও খাওয়াতে পৌঁছে গিয়েছিলেন আশাকর্মী সোনালি প্রধান এবং এএনএম (২) নমিতা হালদার। তাঁরা মূল রাস্তায় দাঁড়িয়েই হাঁক দিয়েছিলেন পোলিও খাওয়ানোর জন্য৷ কিন্তু যেখানে নিজামুদ্দিনের বাড়ি, সেই মাটির রাস্তায় প্রায় কোমর সমান জল৷ আর নিজামুদ্দিনের বাড়ির সামনে জল উঠছে বুক সমান৷ তাই পোলিওর বাক্স নিয়ে বেশি দূর এগিয়ে যাওয়ার সাহস করেননি সোনালি ও নমিতা৷ এদিকে নিজামুদ্দিনের স্ত্রীও ১৫ দিনের থেলেকে নিয়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলেন না৷ এই অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসেন নিজামুদ্দিনই৷ তবে তিনি যে হাড়ির মধ্যে সদ্যোজাতকে শুইয়ে এ ভাবে পোলিও খাওয়াতে নিয়ে আসবেন, কল্পনাও করতে পারেননি তাঁরা৷    

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − thirteen =