শ্রাদ্ধশান্তি করতে গেলে বিজেপি কর্মীর পরিবারকে লিখে দিতে হবে এক বিঘা সম্পত্তি

শ্রাদ্ধশান্তি করতে গেলে বিজেপি কর্মীর পরিবারকে লিখে দিতে হবে এক বিঘা সম্পত্তি

কাঁথি: বিজেপি করার ‘অপরাধ’। বিজেপি করা যাবে না৷ এমনই হুমকি তৃণমূল নেতাদের। দিদার শ্রাদ্ধশান্তি করতে হলে এক বিঘা জায়গা লিখে দেওয়ার পরই শ্রাদ্ধশান্তি করতে পারবেন৷ এমন হুমকি দেন তৃণমূল নেতা। জমি না লিখে দেওয়ায় বিজেপি পরিবারকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আহত তিনজন বিজেপি কর্মী কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের কুলঞ্জরা গ্রামে। বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্বরা।

জানা গিয়েছে, কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের কুলঞ্জরা গ্রামের বাসিন্দা নাড়ু গুড়িয়া নামে দীর্ঘদিন ধরে সিপিএম করত। সিপিএম করার কারণে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ঘরছাড়া রয়েছেন। ছেলে কৌশিক গুড়িয়া, দিদি, মা ও বৃদ্ধা দিদাকে নিয়ে গ্রামে থাকত। সিপিএম থেকে বিজেপি হয়ে যায় ওই পরিবার। টাকা পয়সার অভাবে খেতে না পেয়ে ঘরছাড়া নাড়ু গুড়িয়ার মায়ের  মৃত্যু হয়। এরপর মৃতদেহ দাহ করতে বাধা দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতিকারীরা এমনটাই অভিযোগ। শুধু তাই নয় দিদার শ্রাদ্ধশান্তি করতে গেলে এক বিঘা সম্পত্তি লিখে দিতেন বলা হয় ওই পরিবারকে বলে অভিযোগ। সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বুধবার রাতে গ্রামের সালিশি সভা ডেকে পাঠানো হয় ওই পরিবারকে। সেখানে এই পরিবারকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে৷ আহতদের চিকিৎসা চলছে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে৷

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজেপি কর্মী কৌশিক গুড়িয়া বলেন, ” বাবা আগে সিপিএম করত। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ঘরছাড়া রয়েছেন। এখন আমরা বিজেপি করি। বাড়িতে মা দিদি ও বৃদ্ধা দিদাকে নিয়ে থাকতাম। না খেতে পেয়ে অসুখ দেখাতে না পেরে বৃদ্ধ দিদার মৃত্যু হয়। দিদার শ্রাদ্ধশান্তি করতে দেওয়া হবে না। যদি করতে হয় তাহলে এক বিঘা জমি লিখে দিতে হবে এমনটাই দাবি করেন তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডাবাহিনীরা। মিটিংয়ে ডেকে মারধর করে বাড়ি লুঠপাট চালায় ও সোনার গয়না ছিনতাই করে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা৷ বিজেপি করার অপরাধে আমাদের এরকম অবস্থা৷’’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কৌশিকের মা সরস্বতী গুড়িয়া বলেন, “আমরা বিজেপি করি। এক বিঘা জায়গা লিখে দিতে হবে। তা না হলে তিন জনকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিব বলছিল। এরপর তিনজনকে মিটিং ডেকে বেধড়ক মারধর করে। বাড়িঘর ভেঙে দিয়েছে৷ সব জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে চলে গিয়েছে৷’’ কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তরুণ জানা বলেন, ” তৃণমূল কংগ্রেসের উপর কালিমা লিপ্ত করতে চাইছে। দলের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঘটনা কোন রকমের সমর্থন করি না। যারা করেছেন তারা আমাদের দলের কেউ নয়। অনেকে দলের নাম ভাঙিয়ে ভোটের পরে অতি তৃণমূল হওয়ার চেষ্টা করছেন। দলের কেউ যদি যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব৷’’ পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্বরা। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, “উত্তর কাঁথি বিধানসভায় বিজেপির কার্যকর্তার ওপর তৃণমূলের হার্মাদবাহিনী হামলা চালিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের চরিত্রহীন কাটমানি দল। বিভিন্ন জায়গায় মানুষ প্রতিবাদে মুখর হচ্ছেন৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 5 =