কোলাঘাট: সম্পত্তি বিবাদ নিয়ে ছেলের হাতে খুন হল বাবা। এই ঘটনার মা ও দুই ছেলেকে আটক করলো পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট থানার দহ বরনান গ্রামে। ঘটনার প্রকাশ্য আসার পরই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত বৃদ্ধের নাম আশরাফ আলী খান(৭০)।
সোমবার ভোরে তাকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তারই মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের বিরুদ্ধে। যদিও প্রতিবেশীদের দাবি এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে মৃতের স্ত্রী এবং আরও এক ছেলে। কোলাঘাট থানায় পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে মৃতের দুই ছেলে এবং স্ত্রীকে আটক করে নিয়ে যায় কোলাঘাট থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত আশরাফ আলী খানের তিনজন ছেলে। মেজো ছেলে কোবির আলি খান তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রায়ই ওই মানসিক ভারসাম্যহীন মেজো ছেলে ও ছোট ছেলে রাজিব আলী খানের সাথে ঝগড়া লাগতো বৃদ্ধ বাবার। দুই ছেলের পাশেই থাকতেন মৃতার স্ত্রী সুফিয়া বিবি। ফলে বৃদ্ধ স্ত্রীর সঙ্গেও প্রায়ই পারিবারিক বিবাদ লেগেই থাকত। রবিবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ির এক আত্মীয় অসুস্থ থাকায় শ্বশুরবাড়ি চলে যান বড় ছেলে। বাড়িতে ছিল মানসিক ভারসাম্যহীন মেজো ছেলে, ছোটো ছেলে ও তাদের মা। মেজো ছেলে কোবির আলি খান প্রায়ই বাবার কাছে টাকা চাইত। টাকা না দেওয়ায় বচসাও হত তাদের মধ্যে।
সোমবার রাতে যখন মেজো ছেলে তার বাবার কাছে টাকা চায় তখন টাকা দিতে অস্বীকার করে বাবা। অভিযোগ, সেই আক্রোশে সোমবার ভোরে বাবাকে খুন করে মেজো ছেলে। প্রথমে গলা টিপে এবং পরে মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে বাবাকে খুন করে বলে অভিযোগ। খুনের কথা স্বীকার করে নিয়ে কোবির আলি খান বলেন “আমি বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলাম। বাবা টাকা দিত না কোনোভাবেই। তাই আমি মেরেছি। ভোর আড়াইটার দিকে বাবা যখন ঘুম থেকে উঠে তখন আমি প্রথমে গলা টিপেছি এরপর ওখানে ফেলে দিয়ে মেরেছি।”
যদিও এই খুনের ঘটনায় মৃতের স্ত্রী এবং ছোট ছেলে যুক্ত রয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মহিম আলী খান বলেন, “আমাদের ধারণা ওনাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। ওনার একজন ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। তার ওপর খুনের দোহাই দেওয়া হচ্ছে ঠিকই কিন্তু আমাদের ধারণা এই খুনের ঘটনায় ওনার স্ত্রী এবং ছোট ছেলে যুক্ত রয়েছে।” কোলাঘাট থানার ওসি ইমরান মোল্লা বলেন “আমরা ঘটনার খবর পেয়ে ওই এলাকায় ছুটে যাই। মৃতদেহটি উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। এই ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত সন্দেহে মৃতের স্ত্রী এবং মেজ ও বড় ছেলেকে আটক করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যদিও তদন্তে স্বার্থে পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷