পশ্চিম মেদিনীপুর: ঝুলিতে বোঝাই করা ডিগ্রি৷ একেবারে ইংরেজিতে মাস্টার৷ শিক্ষর জোরেই চাকরি পান রেলে৷ কিন্তু চাকরি করে প্রতিষ্ঠা হওয়ার ইচ্ছা বা মানসিকতা কোনওটাই নেই তাঁর৷ চাকরি তাঁকে টানে না৷ বরং তিনি বুঁদ চুরির নেশায়৷ চুরি বিদ্যায় বেশ হাত পাকিয়েও ফেলেছেন গুণধর৷ তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ উঠেছে৷ কিনকু ‘মহান’ তস্করের বায়োডাটা দেখে চোখ কপালে উঠেছে পুলিশের৷
আরও পড়ুন- পশ্চিমী ঝঞ্ঝায় বেসামাল শীত, ভরা পৌষে মঙ্গল থেকেই রাজ্যে বৃষ্টির ভ্রুকুটি
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্মীর ফ্ল্যাট থেকে তিন লক্ষ টাকার বেশি মূল্যের গয়না চুরির ঘটনায় গ্রেফতার হন সৌমাল্য চৌধুরী নামে এক যুবক। বাড়ি আসানসোলে৷ কিন্তু আর পাঁচটা চোরের থেকে অনেকটাই আলাদা৷ তাঁর পেটে রয়েছে শিক্ষা৷ কিন্তু স্বভাবে রয়েছে চুরি৷ সবটা জেনে একেবারে থ তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা।
ঘাটালের কোন্নগর এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা মহাশ্বেতা দে৷ তিনি বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী৷ গত ৩ জানুয়ারি তাঁর আবাসনের গেটের তালা ভেঙে লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না চুরি করা হয়। ঘাটাল থানার ওসি দেবাংশু ভৌমিক-এর নেতৃত্বে তদন্তে নামে পুলিশ৷ পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় সৌমাল্যকে৷ কিন্তু, চোরের পরিচয় দেখে পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ। তাঁকে জেরা করে জানা যায়, তিনি ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছেন৷ সোমবার সৌমাল্যকে ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে ঘাটালের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘এমন অদ্ভুত শখ বা পেশা আগে দেখিনি৷ যা শুনে আমি হতবাক৷ ইংরেজিতে মাস্টার্স ডিগ্রি করার পরেও চুরির নেশা তাঁর৷ গত বছর হাওড়ায় এক চুরির ঘটনায় ধরা পড়ার পর চাকরি খুইয়েছেন। ভদ্র পরিবারের ছেলে চোর হয়েছে৷ সহ্য করতে না পেরে মা আত্মহত্যা করেছেন। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’ জানা গিয়েছে সৌমাল্যর বাবা পূর্ত দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী৷ সচ্ছ্বল পরিবারের সন্তান৷ মাস্টার্স ডিগ্রির পর তাঁরা বাবা খড়্গপুরে রেলের একটি অস্থায়ী কাজও জুটিয়ে দেন ছেলেকে৷ কিন্তু চাকরি করতে মোটেও ভাল লাগে না সৌমাল্যর৷ ছোট থেকেই চুরির নেশা৷ মায়ের গয়নাও চুরি করেছে বেশ কয়েকবার৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভবত সৌমাল্য ‘ডিসঅর্ডার’- এ ভুগছেন। যাকে বলে ক্লেপ্টোমেনিয়া৷