কলকাতা: আর কিছুদিন পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। বৃহস্পতিবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমান আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের রাজ্য অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান গেরুয়াপন্থী ভোটকর্মীদের একাংশ৷ অন্যদিকে অরাজনৈতিক শিক্ষক সংগঠন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসকের দফতরের সামনে একই দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। জমা দেয় ডেপুটেশন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের দফতরে বিধানসভা নির্বাচনের প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ সুনিশ্চিত নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। এরপর জেলাশাসকের দফতরে এডিএম প্রতিমা দাসের কাছে ১৩ দফা দাবি জানিয়ে ডেপুটেশন জমা দেয় তারা৷ ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, “রাজ্যের সিইও দফতরের পাশাপাশি আমরা প্রতিটি জেলায় জেলাশাসকের দফতরে এবং ব্লকে ব্লকে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আমরা চাই প্রতিটি ভোটকর্মী যেন তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব মাথা উঁচু করে পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করুক নির্বাচন কমিশন।” ঐক্য মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, “নির্বাচনের আগে আমরা যদি যথাযথ প্রতিশ্রুতি না পাই বা নিরাপত্তার প্রশ্নে যদি অবহেলা দেখা যায়, তাহলে আমরা এই আন্দোলনকে আরও বৃহত্তর রূপ দেব। প্রয়োজনে ভোটকর্মী হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব বয়কট করার ডাকও দেব।”
এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে নিরাপত্তার আবেদন করে শিক্ষক নেতা তন্ময় ঘোষ জানান, ‘‘অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আমাদের রাজ্যে ভোট কেন্দ্রীক বিশৃঙ্খলা ও মৃত্যুর হার অনেক বেশি। সাম্প্রতিক নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করতে গিয়ে আধা সামরিক বাহিনীর নিরাপত্তা না থাকার কারণে ভোট লুটেরাদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে হয় ভোট কর্মী রাজকুমার রায়কে। এমন ঘটনা আর যাতে না ঘটে তা সুনিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘অতীতের নির্বাচনে এমনও দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন ঠিকঠাক হয়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের অসাধু আধিকারিকরা প্রয়োজনের কাজে না লাগিয়ে ঠুঁটোজগন্নাথ করে বসিয়ে রেখেছেন। আবার এমনও দেখা গিয়েছে, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ সেক্টর অফিসে যাওয়ার পর এমন সিভিক ভলেন্টিয়ারের নেতৃত্বে বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে যার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের আঁতাত রয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ভুল পথে চালনা করে সময় নষ্ট করে যতক্ষণে ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন, ততক্ষণে ভোট লুট হয়ে গিয়েছে।’’ এদিন তন্ময়বাবু প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ‘স্পর্শকাতর’ ঘোষণা করে আটজন করে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছেন।