নয়াদিল্লি: কোথায় সেই নেতার দাপট। কোথায় সেই চরাম চরাম শব্দের বক্তব্য। তিনি আজ বিষন্ন, বিধ্বস্ত, বড্ড ক্লান্ত। মধ্যরাতের দিল্লি তাঁকে নিয়ে যে এতটা উত্তপ্ত থাকবে তা হয়ত বুঝতে পারেননি বীরভূমে একদা বাঘ। হ্যাঁ, একদাই বলা যায়। কারণ বাঘ আজ গর্জনহীন। মুখ থেকে তাঁর আর বেকায়াদার বান বেরোয় না। তিনি বেশ ক্লান্ত। অনুব্রত মণ্ডল- নামই যথেষ্ট। যাঁর বিরুদ্ধে গরু পাচারের অভিযোগ। যে অভিযোগকে অনুব্রতগামীরা নস্যাত্ করেই বলছেন, উনি নাকি চুরি বা পাচার বা দুর্নীতি করেননি। ওটা নাকি ব্যবসা ছিল। একবার নজরে আনা যাক কী সেই ব্যবসা যা সরাসরি সিবিআই -ইডির কড়া চোখে ধরা পড়ল
• সিবিআইয়ের একটি চার্জশিটে অনুব্রত মণ্ডলকে বলা হয়েছে তিনি গরু পাচার দুর্নীতির মূল পৃষ্ঠ পোষক
• বিভিন্ন দুর্নীতি কাণ্ডে অনুব্রতর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিনে তাঁর আয় প্রয়া ৩০ লাখের কাছে
• গরু, কয়লা, বেআইনি বালি-পাথর খাদান থেকেই অনুব্রতর আয়ের পিরামিড সুউচ্চ
• বিভিন্ন সীমান্তে গরু পাচারের জন্য কয়েক কোটি টাকার কমিশন
আর এই গোটা বিষয়টাই ছিল অনুব্রত মণ্ডলের অধীনে। তিনি বিভিন্ন খাতে টাকা রাখতেন বলেই অভিযোগ। বিধায়ক তহবিল থেকে বিভিন্ন দান-ধ্যানে টাকা বিলিয়েছেন বীরভূমের এককালের শেষ কথা অনুব্রত মণ্ডল। সেই দাপট যেন নিমেশে শেষ। মধ্যরাতে দিল্লিতে ভার্চুয়ালি শুনানি যখন চলছে, তখন অনুব্রতর মুখ জানান দিচ্ছে তিনি আর পেরে উঠছেন না। শ্বাসকষ্ট থেকে একাধিক রোগে জর্জরিত সেই বাঘ আজ গর্জে উঠছে না। চুপ করিয়ে দিচ্ছেন না প্রতিপক্ষকে।
• পেশায় মাছ ব্যবসায়ী অনুব্রতর রাজনীতিতে হাতে খড়ি কংগ্রেস দিয়ে
• ১৯৯৮ সালে মমতা তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করলে তিনি যোগ দেন
• প্রথমে বীরভূম জেলার যুব সভাপতি, তারপর থেকে বীরভূমের জেলা সভাপতি একজনই-অনুব্রত মণ্ডল
• জেলায় ধারাবাহিক ভোট সাফল্যে অনুব্রতর দাপট ক্রমশ বাড়ে
সেই ধারাবাহিক সাফল্যে অতি আত্মবিশ্বাসী অনুব্রতর জনপ্রিয়তা যেমন তুঙ্গে তেমনই অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারে অভিযোগ বার বার তুলেছেন। বীরভূমে তিনি যেন শেষ কথা। সে অন্যায় হোক বা ন্যায়। বার বার বিতর্কিত মন্তব্য করেও তিনি পার পেয়ে গেছেন। কারণ তিনি অনুব্রত মণ্ডল। সেই ক্ষমতাবান মানুষটি দিল্লিতে ছিলেন অবসাদগ্রস্ত। মারাত্মক বিষণ্ন। তাহলে কি বীরভূমের কেষ্ট আজ বিসাদগ্রস্ত।