বাঁকুড়া: ফের হাতির হানায় মৃত্যু হল এক গ্রামবাসীর। মৃতের নাম মঙ্গল হেমব্রম (৪২)। সোমবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া-পশ্চিম মেদিনীপুর সীমান্তবর্তী গ্রাম তেতুলডাঙ্গায়। ঘটনার জেরে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, জঙ্গল লাগোয়া ওই গ্রামে প্রায়শই হাতির দেখা মেলে। গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মঙ্গল হেমব্রম৷ সে সময় ঘরের অদূরে জঙ্গলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি একটি দলছুট হাতি তাঁর দিকে তেড়ে আসে৷ মুহূর্তের মধ্যে হাতিটি তাকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মেরে জঙ্গলের দিকে চলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর আহত অবস্থায় মঙ্গল হেমব্রমকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান৷ তবে শেষ রক্ষে হয়নি৷ চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যখন তখন এলাকায় চলে আসছে দলছুট হাতি৷ ফলে সন্ধ্যে হলেই একরাশ আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে৷ রাতের বেলা যেমন প্রাণ সংশয় তেমনই দিনের বেলায় জঙ্গল ঘেঁষা গ্রামের বাসিন্দারা ফসলের ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছেন৷ বাসিন্দারা বলেন, বেশ কিছু ধান খেয়ে ফেলার পাশাপাশি পায়ের নষ্ট হচ্ছে আরও বেশি। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত হাতির হানায় আট থেকে দশ একরের বেশি ধানের জমি ক্ষতি করেছে বলে দাবি ওই এলাকার মানুষের। মূলত জঙ্গলে খাবার কমে যাওয়ায় বার বার ধানের জমিতে হাতির এই আক্রমণ অনেকে মনে করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী জন্মেজয় ভুঁই, অভিজিৎ মল্লরা বনদফতরের ভূমিকার সমালোচনা করে জানান, ক্ষতিপূরণ পরের কথা। সবার আগে এই দলছুট হাতিগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক। কৃষি জমিতে ক্ষতির পাশাপাশি অনেক সময় লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। ফলে তারা চরম আতঙ্কে আছেন। যেকোন মূল্যে তারা এই আতঙ্ক থেকে মুক্তি চান বলে জানান। বনকর্তারা অবশ্য বলছেন, গ্রামবাসীরা অনেক সময় হাতির যাতায়াতের পথে বাধা সৃষ্টি করছেন৷ ফলে হাতির দল দিকভ্রান্ত হয়ে এদিক ওদিক চলে যাচ্ছে৷ তবে নিহতের পরিবারের হাতে শীঘ্রই ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বন দফতরের তরফে৷