কলকাতা: সংক্রমণ কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না রাজ্যের। বুধবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ছিল ৫,৮৯২ জন, আর আজ পয়লা বৈশাখে তা বেড়ে হল ৬,৭৬৯ জন! কার্যত পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাস সুনামি হচ্ছে, তা বলায় বাহুল্য৷ একদিকে বেলাগাম করোনা, অন্যদিকে ‘অষ্টমে’ বাংলা নির্বাচন৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে শুক্রবার সর্বদল বৈঠকে বসতে চলেছে নির্বাচন কমিশন৷ দাবি উঠছে, করোনার কারণে বাকি তিন দফা হোক একই দিনে৷ রাজনৈতিক দলগুলির তরফে এহেন দাবি উঠলেও, বাস্তবায়নে তা কার্যত অসম্ভব বলে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন৷
বাকি তিন দফার ভোট এক দিনে করা দাবি উড়িয়ে দেওয়া হলেও পঞ্চম দফার ভোট নিয়ে সতর্ক কমিশন৷ আগামী দফাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে রাজ্যে আরও ১১ জন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন৷ উল্লেখ্য, রাজ্যে বর্তমানে ৫৫ জন পর্যবেক্ষক রয়েছেন৷
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও তিন দফার নির্বাচন একসঙ্গে করা কোনভাবেই সম্ভব নয় বলে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে৷ নবনিযুক্ত মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র আজ রাজ্যের বাকি চার দফা ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব এবং কমিশন নিযুক্ত বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে সহ বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন৷
সেখানেই বিবেক দুবে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুললে জানান, তিন দফার ভোট একসঙ্গে করতে গেলে অতিরিক্ত আরও ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন৷ যেটা এত কম সময়ের মধ্যেই কমিশনের পক্ষে তা ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সেই কারণে সব ধরনের করোনা বিধি মেনে নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন সুশীল চন্দ্র৷
সিদ্ধান্ত হয়েছে ষষ্ঠ দফায় ৯২৪ কোম্পানি, সপ্তম দফায় ৭৯১ কোম্পানি এবং অষ্টম দফায় ৮৪৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীতে নির্বাচনের কাজে লাগানো হবে৷ রাজ্যে বর্তমানে এক হাজার ৭১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। এদিকে গতকাল বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেলে কুচবিহারের শীতলকুচি তে গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে যে ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে তা সম্পূর্ণ বিকৃত বলে পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে বৈঠকে জানিয়েছেন৷ সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী যে গুলি চালিয়েছে তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে তিনি কমিশনকে জানান৷
আগামী দফাগুলিতেও বুথের দুশো মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা বাধ্যতামূলকভাবে প্রয়োগ করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে৷ সেই ধারা ভঙ্গ করলে ভারতীয় সংবিধানের ১৫১ নম্বর ধারা অনুযায়ী লঙ্ঘনকারীদের গ্রেফতার করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ এছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে কমিশন শাস্তিমুলক ব্যবস্থা হিসাবে যে একদিন প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল তার মধ্যে তিনি কলকাতার ধর্মতলা গান্ধী মূর্তির পাদদেশে যে ধর্মে অবস্থান করেছিলেন, তা আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেনি বলেও কমিশন জানিয়েছে৷