কলকাতা: অসম, কেরলে, তামিলনাড়ুতে একদফা, পশ্চিমবঙ্গে ৮ দফায় ভোট কেন? কাকে সুবিধা করে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন? প্রত্যেক দফায় এক একটি জেলায় অর্ধেক ভোট কেন? ভোট ঘোষণার দিন সাংবাদিক বৈঠক করে এই প্রশ্নগুলি তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দে্যাপাধ্যায়৷ এবার সেই প্রশ্নগুলি নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করলেন এক আইনজীবী৷ আইনজীবী মনোহর লালের করা মামলাটি মঙ্গলবার গৃহীত হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে৷ পাশাপাশি ভোটে যে ভাবে বিজেপির ধর্মীয় স্লোগান ‘জয় শ্রী রাম’ ব্যবহার করছে, সে দিকেও নজর দেওয়ার আবেদন করেছেন ওই আইনজীবী৷
জনস্বার্থ মামলায় প্রশ্ন করা হয়েছে, তামিলনাড়ু, কেরল, পুদুচেরি অসমে কমদফায় হলেও পশ্চিমবঙ্গে কেন আট দফায় ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর যেখানে পশ্চিমবঙ্গ যেখানে কোনও জঙ্গি হামলার মুখোমুখী নয়, কোনও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নেই, সেখানে কেন আটদফা ভোট তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী। মামলাকারীর তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন, ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারার লঙ্ঘন করা হচ্ছে এই আট দফার সিদ্ধান্তে। মামলায় আরও আবেদন করা হয়েছে, জয় শ্রী রাম স্লোগানের মাধ্যমে ধর্মীয় কেন্দ্রীয়করণের চেষ্টা করছে বিজেপি। বিষয়টিতে যাতে নজর দেওয়া হয়।
বেনজির ভাবে বাংলায় আট দফা ভোট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যপাধ্যায়৷ প্রশ্ন তুললেন, কাকে সুবিধা দিতে আট দফা ভোট ঘোষণা করা করল কমিশন? কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ থাকা উচিত ছিল৷ গুরুত্বপূর্ণ বডি হয়ে কোনও রাজ্যকে সুবিচার দিতে না পারলে, সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?’’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি’র দাবি, তাদের চাহিদা মেনে এই নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হয়েছে৷ এমনকী জেলাগুলোকেও ভাগ করে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু কেন জেলাগুলোকে ভাগ করে দেওয়া হল? সেই প্রশ্নও তোলেন মমতা৷ তিনি এও বলেন, দক্ষিণ ২৪ পরগণায় যেহেতু তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি, তাই সেখানে তিন দিনে ভোট করা হচ্ছে৷ এগুলো কি নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহের কথায় হয়েছে? প্রশ্ন তাঁর৷ এই নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে বাংলাকে অপমান করা হয়েছে৷ তাঁর হুঙ্কার বাংলার মানুষ এর জবাব দেবে৷
কেন পশ্চিমবঙ্গে এত বেশি দফায় ভোট করা হবে তাঁর ব্যাখ্যা অবশ্য আগেই দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা৷ ভোট ঘোষণার পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, ২০১৬ সালে বাংলায় ছয় দফায় ভোট হয়েছিল৷ লোকসভা নির্বাচনে ভোট হয়েছিল সাত দফায়৷ তাই সাত থেকে আট দফায় ভোট হওয়াটা বড় কোনও ইস্যু হতে পারে না৷ এছাড়াও রাজ্যে বিভিন্ন দলের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের বিষয়টি আমাদের নজরে রাখতে হয়েছে৷ দেখতে হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়টিও৷ পাশাপাশি তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে ২ জন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষককে পাঠানো হবে৷ তাঁদের দুই থেকে তিনটে হেলিকপ্টারও দেওয়া হবে৷ যাতে বিভিন্ন জায়গা তাঁরা পরিদর্শনে যেতে পারেন৷