মহার্ঘ আলু-পেঁয়াজ-সব্জি-মাছ-মাংসের দোসর ডিম, রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে গিয়ে চড়ছে ডিমের দাম

মহার্ঘ আলু-পেঁয়াজ-সব্জি-মাছ-মাংসের দোসর ডিম, রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে গিয়ে চড়ছে ডিমের দাম

কলকাতা: বিরোধীশূন্য রাজ্যসভার অধিবেশনের বিল পাস করিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র৷ ৭টি গুরুত্বপূর্ণ বিলের মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য (সংশোধনী) আইন’ পাস করিয়ে আইনেও তা পরিণত হয়েছে৷ নয়া আইন বদে এখন থেকে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তৈলবীজের মতো পণ্য আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকায় থাকছে না৷ ফলে এই পণ্যগুলির উৎপাদন, মজুতদারি, রফতনি ও বিক্রি এবং কোনও ক্ষেত্রে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকছে না৷ নয়া এই আইন কার্যকর হতেই না হতেই  আলু, পেঁয়াজ, দামে চোখে জল আসছে সাধারণ জনতার৷ এবার সাধারণ জনতার পকেটে চাপ বাড়িয়ে রাতারাতি মহার্ঘ ডিম৷

করোনা মহামারীর হাত ধরে আয় কমেছে সাধারণ জনতার৷ তার উপর লাফিয়ে বাড়েছে আলু, পেঁয়াজের দাম৷ সরকারি হুঁশিয়ারি এখনও কান ঢোকেনি ব্যবসায়ীদের৷ মহামারীর সুযোগে ২২-২৫ টাকার আলু এখন ৪০ টাকার দোরগোড়ায়৷ পেঁজায় ৭০ টাকার কাছাকাছি৷ এবার মহার্ঘ আলু, পেঁয়াজের দোসর ডিম৷

করোনা আবহে মাংস-ভাত কিংবা মাছ-ভাত জোটানো এখন চাপের৷ কিন্তু, মহার্ঘ মাছ-মাংস নাই বা হল! দুধের দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে পারে ডিম-ভাত! সস্তায় প্রোটিন পেতে সাধারণ জনতার ভরসা ডিম৷ করোনাকালে যা খুবই প্রয়োজন৷ কিন্তু, তাতে কি? বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় সাধারণ জনতা কী খাবে, কী কিনবে বা আদৌ কিনতে পারবে কি না, তা দেখা তো আর সরকারের কাজ নয়, দায় এড়াতে আইনও হয়েছে৷ সরকার যখন দায় এড়িয়ে গিয়েছে, তখন বাজার তো চড়বেই! এবার সেই আশঙ্কায় বাস্তাবের মাটিতে হারে হারে টের পাচ্ছে সাধারণ জনতা৷ আলু, পেঁজায়, মাছ-মাংস, সব্জির পর এবার মহার্ঘের তালিকায় জুড়ল ডিমও৷

করোনা ঠেকাতে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বলছেন চিকিৎসকরা৷ সস্তায় প্রোটিন পেতে সাধারণ জনতার ভরসা ছিল ডিম৷ করোনায়  ডিম চাহিদাও ছিল বেশি৷ জনতা বেশ বেশি ডিম কিনছে, বিষয়টি বুঝতে খুব একটা দেরি করেননি ব্যবসায়ীদের একাংশ৷ মহামারীর সুযোগে এবার সেই ডিমকেও মহার্ঘ বলে দেগে দেওয়া হয়েছে রাতারাতি৷ বাংলায় ভিন রাজ্য থেকে ডিম আসে৷ চাহিদার তুলনায় জোগান কমিয়ে বাজারে তৈরি হয়েছে নতুন বিড়ম্বনা৷ আর তাতেই চড়তে শুরু করেছে ডিমের দাম৷ গত এক সপ্তাহে বাংলার খুচরো বাজারে পোলট্রির মুরগির ডিমের দাম ৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা হয়ে গিয়েছে৷ হাঁসের ডিম ১২টাকার কাছাকাছি৷ পাইকারি বাজারে এই মুহূর্তে ১০০টি ডিমের দাম ৫৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ ১টি ডিমের দাম পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫টাকা ৬২ পয়সা৷ খুচরো বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা জোড়া৷

রাজ্যে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা থাকে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি৷ বাংলায় মেরেকেটে ডিম উৎপাদিত হয় প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ৷ বাকিটা আসে ভিন রাজ্য৷ মূলত অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে৷ গোটা দেশজুড়ে ডিমের চাহিদা বাড়তে থাকায় আগে দৈনিক গড়ে ২৫-৩০টি ডিমের গাড়ি ঢুকত বাংলায়৷ এখন তা কমেছে হয়েছে ১৮ থেকে ২০টি গাড়ি৷ বাইরে থেকে ডিমের গাড়ি কম আসায় ডিমের দাম আর কমবে না বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − twelve =