লাটে TET, আপার! এখনই হবে না শিক্ষক নিয়োগ, জবাব শিক্ষামন্ত্রীর

করোনা পরিস্থিতির জেরে এবার স্থগিত রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ করোনা সংকট শুরুর আগে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের একাধিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল। নতুন করে কিছু ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর কথাও চিন্তাভাবনা করছিল শিক্ষা দফতর। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের প্রাণ বাঁচানোই রাজ্য সরকারের প্রধাণ লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ইটিভি ভারতের খবর অনুযায়ী, আপাতত নিয়োগ নিয়ে শিক্ষা দফতর কোনও চিন্তাভাবনা করছে না৷ একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

 

কলকাতা: করোনা পরিস্থিতির জেরে এবার স্থগিত রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ করোনা সংকট শুরুর আগে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের একাধিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল। নতুন করে কিছু ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর কথাও চিন্তাভাবনা করছিল শিক্ষা দফতর। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের প্রাণ বাঁচানোই রাজ্য সরকারের প্রধাণ লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ইটিভি ভারতের খবর অনুযায়ী, আপাতত নিয়োগ নিয়ে শিক্ষা দফতর কোনও চিন্তাভাবনা করছে না৷ একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

এর আগে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা একটি মেমোরেন্ডামে চাকরি ক্ষেত্রে সবরকম নিয়োগ স্থগিত রাখার কথা জানানো হয়েছিল৷ সেই তালিকায় ঢুকে পড়ল শিক্ষক নিয়োগও৷ করোনা পরিস্থিতির জেরে উদ্ভূত সংকট এখন নিয়োগের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তবে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কলকাতা পৌরনিগমের নির্বাচনের পর টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (টেট) পরীক্ষা হবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে আপাতত স্থগিত পুরসভা ভোট৷ সেই সঙ্গে অনিশ্চিত টেট পরীক্ষাও৷ অন্যদিকে আবার উচ্চ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে৷ এই মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ পাওয়ার পর নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করা হবে বলে আশায় করেছিলেন রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু, লকডাউনের জেরে আপাতত বন্ধ রয়েছে হাইকোর্ট। ফলে কবে এই চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগপত্র হাতে পাবেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷

স্কুলের পাশাপাশি রাজ্যের কলেজগুলিতে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে একটি নতুন পদের ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। স্টেট এডেড কলেজ টিচার নামক সেই পদে নিয়োগের জন্য বিকাশ ভবনে শুরু হয়ে গিয়েছিল নথি যাচাই প্রক্রিয়াও। কিন্তু কোরোনা সংক্রমণের জেরে দফতরে বসে নথি যাচাই প্রক্রিয়া আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ এর পরিবর্তে অনলাইনেই নথি যাচাই প্রক্রিয়া করা হবে বলে ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু লকডাউনের জেরে সেই কাজও শিকে উঠেছে৷

লকডাউন ওঠার পর নিয়োগ পক্রিয়া শুরু হবে বলে অনেক প্রার্থীই আশায় বুক বেঁধেছেন৷ কিন্তু আপাতত তাঁদের আশায় জল ঢেলেই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘এখন নিয়োগ নিয়ে আমরা ভাবছিই না। বর্তমান অবস্থা নিয়েই আমরা চিন্তাভাবনা করছি৷ যখন ভাববার সময় আসবে তখন দেখব৷’’ তিনি আরও বলেন, “এখন নিয়োগ নিয়ে কী করে ভাবব? লোক বাঁচবে কিনা জানি না। যাঁকে নিয়োগ করা হবে তিনি বেঁচে থাকবেন কি না সেটাই জানি না।”

গত ২ এপ্রিল অর্থ দফতরেপ পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়৷ যেখানে বলা হয়েছে, কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্যের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে৷ ২১ দিন লকডাউনের জেরে সারা দেশের পাশাপাশি রাজ্যের অর্থনীতিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে অর্থ দফতরের অনুমোদন ছাড়া কোনও নিয়োগ করা যাবে না। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই নির্দেশিকা লাগু থাকবে । এই নির্দেশে সবচেয়ে বেশি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীরা৷ অর্থ দফরের নির্দেশিকা অনুযায়ী উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে কিনা প্রশ্ন করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘সার্কুলার না দেখে কিছু বলতে পারব না৷’’

কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে, ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট রাজ্যবাপী টেট পরীক্ষা হয়েছিল শিক্ষক নিয়োগের জন্য৷ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার আশায় কয়েক লক্ষ বেকার চাকরিপ্রার্থী এই পরীক্ষায় বসে ছিলেন৷ সেখানে প্রশিক্ষিত চাকরি প্রার্থী হিসেবে ১ লক্ষ ২০ হাজার ও অপ্রশিক্ষিত চাকরি প্রার্থী হিসেবে ২ লক্ষ ২৮ হাজার প্রার্থী, সব মিলিয়ে অন্তত ২ লক্ষ ২৮ হাজার পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন৷ কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও কেন উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ মামলার জট কাটিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও কেন শেষ করতে পারল না রাজ্য? পাঁচ বছরে যখন সমস্যা সমাধান হল না, তখন করোনা এসে সব ভেস্তে দিল? অন্যদিকে,  দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত টেটের পরীক্ষায় নিতে পারেনি রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ৷ ২০১৫ সালের পর এই রাজ্যে টেট বা টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট নেওয়া হয়৷ ২০১৭ সালে ওক্টবরে টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও এখনও শূন্যপদ জানানো দূর, কবে হবে পরীক্ষা, তা এখনও জানানো হয়নি৷ যেখানে আবেদন জমা নেওয়ার পরও পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে না, সেখানে মহামারী করোনা কার্যত তুচ্ছ বলেই মনে করছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *