কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যের কাছ থেকে এমন কিছু পায়নি ইডি যে কারণে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে হবে। আদালত এমনটাই জানিয়ে শর্তসাপেক্ষে মানিকের স্ত্রীকে জামিন দিয়েছে। এই প্রথম নিয়োগ মামলায় জামিন পেলেন কোনও অভিযুক্ত। ১ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে এই জামিন আজ মঞ্জুর করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
এদিন শুনানিতে আবেদনকারী আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, শতরূপার বিরুদ্ধ এখনও কোনও প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, সেখানে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও প্রমাণ নেই ইডির কাছে। এছাড়া তিনি এও জানান, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও নতুন কিছু পায়নি ইডি। তাই ইডির বিশেস আদালত যে হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল তা অনৈতিক। আদালতের নির্দেশেই ইডির কাছে হাজিরা দিয়েছিলেন শতরূপা। এখানে গ্রেফতারির কোনও ইস্যুই ছিল না। এই প্রেক্ষিতেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, একজন সমনে হাজিরা দিলে জামিন দিয়ে তাঁর রেকর্ড রাখলেই চলে। কী এমন হল যেখানে রাতারাতি হেফাজতে দিতে হল? মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী বলে এই কাজ? প্রশ্ন ছিল তাঁর।
যদিও ইডির আইনজীবী ফিরোজ এদুলজী জানান, আদালতের সমনে ডাক পেলেও আদালতের কাছে তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে কিছু প্রমাণ আদালতে জমা করা হয়েছিল। আর তিনি এও জানান, মানিকের স্ত্রী নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন আবার হাইকোর্টেও। দুটি জায়গায় কী ভাবে একই আবেদন করে একজন মানুষ সেই প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী। একই সঙ্গে ইডি আদালতে এও জানায়, ইতিমধ্যেই তাঁর ব্যাঙ্ক থেকে মোট ১.৪৫ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। তবে বিচারপতি জানতে চান, শতরূপা ভট্টাচার্যকে সাক্ষী হিসাবে ব্যবহার করে তদন্ত চালালে অসুবিধা হত কিনা। ইডি এই প্রেক্ষিতে স্পষ্ট জানায়, শতরূপা ভট্টাচার্যের জামিনে তাদের তদন্তে অসুবিধা হবে। ইডির দাবি, উনি স্বামী ও ছেলের সঙ্গে মিলে অপরাধ করেছেন। তিনি গৃহবধূ, রোজকার না থাকলেও, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি টাকা। অন্য এক মৃত ব্যক্তির সঙ্গেও তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে যে অ্যাকাউন্ট ব্যক্তির মৃত্যুর পর খোলা হয়েছিল। ইডি তাঁকে আবার ‘লেডি ম্যাকবেথ’ হিসেবেও ব্যাখ্যা করেছে।