লকডাউন কেড়েছিল উপার্জন! ইস্ট বেঙ্গলের ‘ফুটবল-কন্যা’ এখন ফ্লিপকার্টের ডেলিভারি কর্মী

লকডাউন কেড়েছিল উপার্জন! ইস্ট বেঙ্গলের ‘ফুটবল-কন্যা’ এখন ফ্লিপকার্টের ডেলিভারি কর্মী

 

কলকাতা: কোভিড সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত, লকডাউন পরিস্থিতি দেশের যুব সমাজকেও রীতিমত নাড়িয়ে দিয়েছে৷ এই আবহে চাকরি হারিয়েছেন অনেকেই৷ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে বসে রয়েছেন বহু তরুণ-তরুণী৷ আবার অনেকেই খুঁজে নিয়েছেন অন্য জীবীকা৷ হাওড়ার বাসিন্দা বছর ২৪-এর মহিমা খাতুন ইস্ট বেঙ্গল ফুটবল ক্লাবের মহিলা টিমের খেলোয়ার৷ একইসঙ্গে ফুটবল অ্যাকাডেমির কোচও৷ তবে দীর্ঘ লকডাউন ও কোভিড পরিস্থিতির জেরে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর উপার্জনও৷ তবে থেমে থাকেনি মহিমা৷ ১৬ অক্টোবর থেকে গোটা দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে ফ্লিপকার্টের বিগ বিলিয়ন সেল৷ ফ্লিপকার্টে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি৷

কয়েক মাস আগেই গঠিত হওয়া ইস্ট বেঙ্গল ফুটবল ক্লাবের মহিলা টিমের গোলকিপার হলেন এই মহিমা খাতুন৷ তবে করোনা আবহে বন্ধ হয়ে যায় তার সবরকম উপার্জন৷ তবে তাতে মন খারাপ করে বসে থাকেনি মহিমা৷ অন্য কাজ খুঁজতে শুরু করে সে৷ এরপরই সন্ধান পায় ফ্লিপকার্টের এই চাকরির৷ সেখানেই যোগ দেয় মহিমা৷ মহিমা জানিয়েছেন, ‘‘ঘরের কাজ আমার খুব বোরিং লাগছিল৷ এই ডেলিভারি নেটওয়ার্কের কাজের সুযোগ পেয়ে আমি খুব উত্সাহিত৷’’

মহিমার কাজ, সঠিক জিনিস কাস্টমারের সঠিক লোকেশনের পৌঁছেছে কিনা তা দেখা ও তার হিসেব রাখা৷ তবে এই কাজ শুনতে সহজ লাগলেও আদতে তা খুব সহজ নয়৷ সকাল ৫টা উঠে বেশ কিছুক্ষণ ফুটবল প্র্যাকটিস করেন মহিমা৷ এরপর সকাল ৭ টা অফিসে রিপোর্টিং করেন সে৷ এরপর ড্রাইভারকে সঙ্গে নিয়ে ও ডেলিভারির জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয় মহিমাকে৷ প্রতিদিন অন্তত ১৫ থেকে ১৬ টা ডেলিভারি করতে হয় তাঁকে৷ ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন সহ নানা জিনিসপত্র ডেলিভারি করা ও তার সঠিক হিসেব রাখতে হয় এই ‘ফুটবল গার্ল’কে৷

মহিমার কথায়, প্রায় ১০ বছর আগে গ্রাম থেকে চলে এসেছে মহিমা৷ তখন মেয়ে হয়ে ফুটবল খেলার জন্য নানা লোকের নানা কথা শুনতে হয়েছিল তাকে৷ এরপর মারা যান মহিমার বাবা৷ তারপর থেকে খেলাধুলা ও কাজ দুটোই সমানভাবে করে আসছে সে৷ এখন মানুষের কটুক্তি আর তার গায়ে লাগে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine + twenty =