ধূলিসাৎ সংযুক্ত মোর্চা, আম-ছালা দুইই হারাল বামেরা

ধূলিসাৎ সংযুক্ত মোর্চা, আম-ছালা দুইই হারাল বামেরা

কলকাতা: নবান্ন মমতারই৷ বিকেল পর্যন্ত ফলাফলের যা প্রবণতা তাতে স্পষ্ট, বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকারের স্বপ্ন খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়ে নিজের মেয়েকেই চেয়েছে বাংলা৷ কিন্তু কেন এমন ভাবে সংযুক্ত মোর্চাকে প্রত্যাখ্যান করল আমজনতা? বিকেল চারটের পরিসংখ্যান বলছে মাত্র চারটি আসনে এগিয়ে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফের জোট৷ শতাংশের হিসাব খুঁজতে বসলে লজ্জা ছাড়া কিছুই মিলবে না৷ কিন্তু এই বিপর্যয়ের কারণ কী? কী এমন হল যার জন্য নিজেদের গড়টুকুও ধরে রাখত পারল না সংযুক্ত মোর্চা?

ময়নাতদন্ত করতে বসলে প্রথমেই যেটা স্পষ্ট, এবারের দ্বিমেরুর ভোটে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে তৃণমূল-বিজেপির সামনে কোনও চ্যালেঞ্জই খাড়া করতে পারেনি সংযুক্ত মোর্চা৷ মানুষ হয় দাঁড়িয়েছে বিজেপির পাশে, নয়তো তৃণমূলের পক্ষে৷ অন্য কোনও বিকল্পের সন্ধানই করেননি নির্বাচকরা৷ আর তার জন্যই জামুড়িয়া থেকে যাদবপুর- সংযুক্ত মোর্চা স্রেফ উড়ে গিয়েছে৷ আবার এটাও লক্ষণীয়, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে যে বাম ভোট রামে গিয়েছিল, তার কিছুটা সেখান থেকে সরে এসেছে বটে, তবে তা আর বামে ফেরেনি, জমা হয়েছে তৃণমূলের ঘরে৷ আবার সংখ্যালঘু ভোটও তাদের অস্তিত্বরক্ষার স্বার্থে বিজেপিকে রুখতে এক ও একমাত্র আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ ফলে মালদা-মুর্শিদাবাদের মতো একদা কংগ্রেসি দুর্গেও এবার তৃণমূলের রমরমা৷

তা ছাড়া বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরোধিতা করতে গিয়ে আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বাধীন আইএসএফের হাত ধরাও বামেদের বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ একে তো ২০১৬ সাল থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত গড়া নিয়ে খচখচানি ছিলই, তার ওপর বামেদের মতো ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি কী ভাবে এহেন কট্টরপন্থী অংশের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে প্রথম থেকেই৷ ব্যালট বাক্স বলছে, ভাইজানের শক্তিতে ভর করে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আম ও ছালা দুইই গিয়েছে বামেদের৷ সংখ্যালঘু ভোট তো সংযুক্ত মোর্চার ঘরে আসেইনি, উলটে মাত্র দশ বছরের মধ্যেই বাংলায় বিলুপ্ত প্রজাতিতে পরিণত লাল ব্রিগেড৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *