কলকাতা: জাতীয় নির্বাচনের বৈঠকে গড়হাজির কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার৷ কমিশনের বৈঠকে হাজির না থাকায় এবার রাজ্য প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি চাইলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা৷ আজ, কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল তাঁর৷
এদিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা জানান, ভয়মুক্ত পরিবেশে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে৷ ভোট চলাকালীন হিংসার ঘটনা ঘটলে এলাকার ডিএম ও এসপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রত্যন্ত এলাকাতেও টহলদারী চালাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী৷
কমিশনের জবাবদিহি চাওয়ার নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা৷ কেননা, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্ত বদলির প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছে নির্বাচন কমিশন৷ তিন বছরের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া পুলিশ কর্তাদের সরিয়ে দিতে জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তি৷ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী সরতে পারেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার? তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা৷ ভোটের আগে নিজের পদ থেকে সরতে পারেন, এই আশঙ্কা থেকেই কি এদিনের বৈঠক এড়িয়ে গেলেন তিনি৷ প্রশ্ন তুলছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
কেননা, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সরে যেতে হয়েছিল৷ তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর তাঁকে ফের পুরনো পদে ফিরিয়ে আনা হয়৷ ফলে, তাঁর তিন বছরের মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে! সূত্রের খবর, বর্তমান এডিজি (আইবি) সিদ্ধিনাথ গুপ্তাকে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) পদে বসিয়ে, সেই পদে থাকা অনুজ শর্মাকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার করে দেওয়া হতে পারে৷ যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি৷ ভোটের আগে সরকারি স্তরে এটি রুটিন বদলি বলা মনে করছে পুলিশ মহলের একাংশ৷
নবান্ন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যেসব আইএএস এবং আইপিএসদের তিনবছরের মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে এবং যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে তাদের বদলি করতে হবে। সেই তথ্য জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে৷
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে বুধবার পাঁচজন এসডিও, আটজন অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং ২২ জন আইসি’কে বদলি করা হল। যাঁরা এক টানা তিন বছর এক জায়গায় আছেন, তাঁদের বদলি করা হয়েছে। এছাড়া যে জেলায় সেই অফিসারদের বাড়ি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী সেই জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে ২০১৭ সালের মে মাসের আগে যাঁরা উপনির্বাচন পরিচালনা করেছেন, তাঁদের বদলির নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সেই নির্দেশ মেনেও বদলির প্রক্রিয়া চালাচ্ছে নবান্ন। নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোটের কাজে যুক্ত সব অফিসারকে বদলি করতে হবে। সেই মতো বদলির তালিকা তৈরির কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার সহ আরও কিছু পুলিস কর্তার বদলির নির্দেশ বেরবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।