হাওড়া: কোথাও থিমের ছোঁয়া আবার কোথাও সাবেকিআনা। এবারেও রীতিমতো চমক জাগাতে তৈরি হাওড়ার পুজো।
“আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবি, মন বান্ধিবি কেমনে” ? ৭৫তম বর্ষে এই ভাবনা নিয়েই এবার শারদোৎসবের আয়োজন করেছেন মধ্য হাওড়ার কৈলাশ ব্যানার্জি লেনের হাওড়া সরস্বতী ক্লাব। বর্তমানে করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে এক অদ্ভুত সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্ব। এই কঠিন অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের হাত-পা বেঁধে দিলেও মনের আবেগকে বেঁধে রাখা সম্ভব নয়। সেই মনের জোরেই অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটবে। শুভ শক্তির প্রকাশ ঘটবে।
এই বার্তাই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে থিমের মাধ্যমে। মন্ডপে যেমন অভিনবত্ব থাকছে, এদের প্রতিমাতেও থাকবে সনাতনী ছোঁয়া। প্রখ্যাত ভাস্কর প্রদীপ রুদ্র পালের প্রতিমা দেখা যাবে এদের পুজোমন্ডপে। কোভিড পরিস্থিতিতে এবার পুজোয় সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না। উদ্বোধন হবে চতুর্থীর সন্ধ্যায়। মন্ডপের গেটে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া মাস্ক পরে কেউ না এলে মন্ডপে ঢুকতে পারবেন না।
এবার ৪৮তম বর্ষে পদার্পণ করল হাওড়ার ইছাপুর শিবাজি সংঘের পুজো। রাজ্য সরকারের পুজো কার্নিভালে অংশ নেওয়া হাওড়ার এই নামী পুজোর এবারের ভাবনা “চেনা জিনিস অচেনা পথ”। বাঁশের হস্তশিল্পকে ভিত্তি করে এবারের থিম ভাবনা এদের। প্রাচীন পৌরাণিক বিভিন্ন গল্প-গাথা যান্ত্রিক সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভুলতে বসেছে। মন্ডপ ভাবনায় এরা মা দূর্গা ও তাঁর সন্তানদের পাশাপাশি মা কালীর দশ রূপ এবং ভগবান বিষ্ণুর দশ অবতার বাঁশের তৈরি বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরতে চলেছেন। এছাড়াও বাঁশের চুপড়ি, কুলো, ঝুড়ি, শীতলপাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন দেবতার সখা ও সখীদের পুতুলের মডেল যা মন্ডপে দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। ভারতবর্ষের পৌরাণিক গল্প-গাথা মন্ডপ পরিকল্পনায় ফুটিয়ে তুলছেন এরা। তৃতীয়ায় এদের পুজোর উদ্বোধন। মহিলাদের এবং বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের পুজোয় বস্ত্র বিতরণ করা হবে ক্লাবের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
এবার ৮৮তম বছরে পদার্পণ করল মধ্য হাওড়ার দেশপ্রাণ শাসমল রোডের ব্যাঁটরা অন্নপূর্ণা বারোয়ারি ও হাওড়া অন্নপূর্ণা ব্যায়াম সমিতির দূর্গাপুজো। এবারে এদের পুজো সাবেকি। কোনও থিম থাকছে না। মন্ডপের আকর্ষণ নয়নাভিরাম দেবী প্রতিমা। আর কয়েক ফুটের বিশাল ঝাড়বাতি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১৫ ফুট দূরত্বে প্রতিমা দর্শন করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। পঞ্চমী থেকে পুজো শুরু হবে। আগে কুমারী পুজো হত। দু’বছর কোভিডের কারণে কুমারী পুজো বন্ধ হয়ে যায়। কোভিড বিধি মেনে পুজো হবে। এখানে স্যানিটাইজার, মাস্কের ব্যবস্থা রাখা হবে। এছাড়াও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হবে। রাখা হবে স্যানিটাইজার টানেল। পাশাপাশি মানুষকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে লিফলেট বিলি করা হবে।