কলকাতা: ভর্তির জন্য অগ্রিম টাকা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দরাদরির মাঝেই অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয় করোনা আক্রান্ত এক রোগীর৷ এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের করে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন৷ এই মামলার শুনানিতে ডিসান হাসপাতালকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হল৷ সেই সঙ্গে কোনও কোভিড রোগীদের থেকে অগ্রিম নেওয়া যাবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিল কমিশন৷
আরও পড়ুন- লকডাউনের ভয়াবহ বিল নিচ্ছে না সিইএসসি, কৃতিত্ব দাবি বিজেপির
কোভিড মৃত্যু মামলায় এই প্রথম এতবেশি জরিমানা করা হল কোনও হাসপাতালকে৷ বুধবার মামলার শুনানিতে কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিন সপ্তাহের মধ্যে দুটি কিস্তিতে জরিমানার টাকা জমা দিতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে৷ আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে প্রথম কিস্তির ৫ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে ডিসানকে৷ সেই টাকা ওই পরিবার ফেরত পাবে কি না তা তদন্ত শেষে বিবেচনা করবে কমিশন। তবে যত দিন এই তদন্ত চলবে তত দিন ডিসান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ধরনের রোগীর কাছ থেকে এক টাকাও অগ্রিম বাবদ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন- তৃণমূলী ছত্রধরের বিরুদ্ধে ‘খাতা’ খুলছে এনআইএ! তদন্তে জঙ্গলমহলে ঘাঁটি
বুধবার মামলার শুনানির সময় কমিশনের চেয়ারম্যান অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ডিসানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর৷ এই হাসপাতালের লাইসেন্স সাসপেন্ড করা উচিত ছিল৷ কিন্তু যেহেতু হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি আছেন, সেই কথা ভেবে হাসপাতাল চলতে দেওয়া হচ্ছে৷
পার্ক সার্কাসের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তমলুকের বাসিন্দা লায়লা বিবি৷ সেখানে করোনা ধরা পড়ার পর তাঁকে ডিসানে নিয়ে আসা হয়৷ ভর্তির জন্য তাঁর পরিবারের কাছে ৩ লক্ষ টাকা অগ্রিম চায় ডিসান৷ সেই মুহূর্তে পুরো টাকা ছিল না তাঁদের কাছে৷ শেষে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জমা দেন তাঁরা৷ কিন্তু টাকা নিয়ে সমস্যা মেটার আগেই হাসপাতালের দোরগোড়ায় থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সে মারা যান লায়লা বিবি৷ কেন লালয়া বিবি হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও চিকিৎসা পেলেন না, সে বিষয়ে ডিসান কর্তৃপক্ষকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন৷