করোনায় মৃত ‘প্রদীপ ডাক্তারে’র বিল ১৮ থেকে ৩.৬০ লক্ষ টাকা‍ কমালো মেডিকা

করোনায় মৃত ‘প্রদীপ ডাক্তারে’র বিল ১৮ থেকে ৩.৬০ লক্ষ টাকা‍ কমালো মেডিকা

 

কলকাতা: করোনা আবহে রোগীদের থেকে লুট চলছেই৷ কোথায় টাকার দরাদরি করতে গিয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু অভিযোগ, কখন আবার ধরানো হয়েছে বেলাগাম চিকিৎসা বিল৷ বাদ যাননি খোদ চিকিৎসকও৷ করোনায় মৃত উত্তর ২৪ পরগনা শ্যামনগরের জনপ্রিয় চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের চিকিৎসা বিল নিয়েও বড়সড় গলমিলের অভিযোগ৷ স্বাস্থ্য কমিশনের অনুরোধের পর প্রদীপ ভট্টাচার্যের চিকিৎসা বিল পুনর্মূল্যায়ন করল মেডিকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ পুনর্মূল্যায়ন হতেই একধাক্কায় বেশ খানিকটা কমল বিল৷

সোশ্যাল মিডিয়ায়  শ্যামনগরের জনপ্রিয় চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের চিকিৎসা বিল নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে৷ চিকিৎসকের মৃত্যুর সময় তাঁর পরিবারের হাতে ১৮ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার আকাশছোঁয়া বিল ধরিয়েছিল বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকা কর্তৃপক্ষ৷ নেটপাড়ায় বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ার পর বেসরকারি হাসপাতল কর্তৃপক্ষকে বিল নর্মূল্যায়নের জন্য বার্তা পাঠানো হয় স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে৷

স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যানের পাঠানো আবেদনমূলক মেসেজের ভিত্তিতে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের৷ চিকিৎসকের বিল নর্মূল্যায়ন করা হয়৷ এক ধাক্কায় ওই চিকিৎসকের বিল কমে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা৷ যা এককথায় নজিরবিহীন৷ কিন্তু, ১৮ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার আকাশছোঁয়া বিল রাতারাতি কীভাবে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কমল? তাহলে কি ওই বিলে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার জল মেশানো ছিল? তাহলে আগে কেন ওই টাকা কমানো হল না? করোনা আবহে বিলের উপর ৩ লক্ষ ৬০ হাজার চাপিয়ে কি চিকিৎসক পরিবারের হাতে ওই বিল ধরানো হয়েছিল? যদিও এবিষয়ে জবাব মেলেনি মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের৷ এক ধাক্কায় চিকিৎসা বিল ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে স্বাস্থ কমিশন৷

জানা গিয়েছে, গত সোমবার করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় উত্তর ২৪ পরগনা শ্যামনগরের জনপ্রিয় চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের৷ তিনি বেশ কিছু দিন মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন৷ চিকিৎসকের চিকিৎসা খরচ রচ জোগাতে শ্যামনগরের বাসিন্দা একত্রিত হয়ে অর্থ সংগ্রহ করে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা তুলে দেন৷

কেনান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও  প্রদীপবাবু দিন-রাত এক করে স্থানীয়দের চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে গিয়েছেন৷ তার আগেও স্থানীয়দের বিপদের বন্ধু হয়ে পাশে থেকেছে৷ আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া রোগীদের থেকে মাত্রা দু’টাকা কিংবা বিনামূল্যে করাতেন চিকিৎসা৷ বারাকপুর থেকে নৈহাটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাসিন্দাদের কাছে ‘প্রদীপ ডাক্তার’ ছিলেন ভগবান!  স্থানীয়দের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হন করোনায়৷ সোমবার তাঁর মত্যু হয়৷ মৃত্যুর সময় তার পরিবারের হাতে ১৮ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেয় বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় বিতর্ক৷ পদক্ষেপ নেয় কমিশন৷ পরে, কার্যত চাপের মুখে পড়ে একধাক্কায়  ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বিল কমিয়ে দিয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু, বিল কমিয়েও নেটপাড়ায় বিতর্কের বাইরে থাকছে না মেডিকা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + 13 =