কলকাতা: “কসাই আর ডাক্তার একই তো নয়, কিন্ত দুটোই আছে প্রফেশন”, বহুদিন আগে নচিকেতার এই গান নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। ডাক্তার, যাদের ঈশ্বরের দূত বা স্বয়ং ঈশ্বর বলা হয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে এমন গান এবং ভাবনাকে কটাক্ষ করেছিল সমাজের একাংশ। পরবর্তী ক্ষেত্রে একাধিকবার ডাক্তারদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দাস যা করলেন তাতে ডাক্তারদের অন্য রূপ ফুটে ওঠে স্পষ্টত। দাবিমতো ফি দিতে পারেননি অসুস্থ বৃদ্ধা, তাই ওষুধ লিখেও তা কেটে দিলেন তিনি! ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এমনটাই। অবাক করা এই ঘটনা ঘটেছে কালনায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালতি দেবনাথ নামের ওই বৃদ্ধার বেশ কয়েকদিন ধরেই মাথায় এবং ঘাড়ের যন্ত্রণা হচ্ছিল। পরবর্তী ক্ষেত্রে চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দাসের কাছে যান তিনি। সেদিন ফি মিটিয়ে দিতে পেরেছিলেন তিনি কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে যখন সেই চিকিৎসকের কাছে আবার দেখাতে চান নিজেকে তখন ঐ বৃদ্ধার থেকে কাঙ্খিত ফি পাননি ওই চিকিৎসক। ফলে ওষুধের নাম লিখে সেটা কেটে দিয়েছেন তিনি বলে অভিযোগ উঠছে। প্রথমে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ পান ঐ বৃদ্ধা। জানা গিয়েছিল তিনি ব্রেন স্ট্রোক এবং স্পন্ডিলাইটিস আক্রান্ত। কিন্তু সেদিন চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দাসের কাছে গিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু ঐ বৃদ্ধা সেদিন টাকা নিয়ে আসতে পারেননি। তাই অভিযোগ উঠছে ওই চিকিৎসক ওষুধ লিখে ওটা কেটে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায় এবং স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দাসের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
আরও জানা যাচ্ছে, গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদে জানানো হয়েছে এবং ওই চিকিৎসকের চেম্বারে সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নির্দিষ্ট ঘটনায় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কেমন পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। এদিকে সময়মতো জরুরি ওষুধ না পাওয়ায় ওই বৃদ্ধা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। অমানবিক এই ঘটনা ঘটানো ওই ডাক্তার শুধু নিজেকে নয় অপমান করেছেন গোটা ডাক্তার সমাজকেই।