আজ বিকেল: ভূতের ভয়ে কাঁপছিলেন বছর উনিশের গৃহবধূ। শ্বশুরমশাই গত হওয়ার পর থেকেই ভয়টা জাঁকিয়ে বসেছে। রাতদুপুরে বাড়িতে ঢিল পড়ছে। রাতে বিছানায় শুতেই জানলা থেকে পা ধরে টানাটানি, কখনও সুরসুরি দেওয়া ভূতের ভয়ে প্রায় তটস্থ থাকতেন ওই গৃহবধূ। বাড়ির সদস্যদেরও জানিয়েছিলেন এই সমস্যা। রবিবার রাতে ওই বধূর শ্লীলতাহানি করতে এসে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল সেই ভূত বাবাজি। মুখের ময়দা, পাউডার কালি মুছতেই বেরিয়ে পড়ে আসল মুখ। ধৃতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ববর্ধমানের কাটোয়ার মণ্ডল পাড়ায়।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী মাছের আড়তে কাজ করেন। রবিবার রাতে তাঁরই ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে ওই ভূত। তবে ভয় পেয়ে চেঁচামেচি করতেই ঘুমন্ত স্বামী জেগে যায়। ততক্ষণে ভূতকে জাপটে ধরেছেন গৃহবধূ। মুখে মাখানো ময়দা, পাউডার ও কালি সরতেই বেরিয়ে পড়ে আসল ভূতের মানুষ চেহারা। অভিযুক্তের নাম সূরয শেখ। সে নির্যাতিতার প্রতিবেশী। এদিকে প্রাণভয়ে বধূর হাত ছাড়িয়ে চম্পট দিয়েছে সূরয। এই ঘটনার পরে পরেই নির্যাতিতার পরিবারের তরফে সূরযের বিরুদ্ধা থানায় অভিয়োগ দায়ের হয়। পরে পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে ছেলের বিরুদ্ধে আনা এহেন অভিযোগ মানতে নারাজ ধৃতের পরিবারের সদস্যরা।
নির্যাতিতার অভিযোগ, প্রায়ই রাতে বাড়িতে ঢিল ছোঁড়া, চুল ধরে টানাটানির ঘটনা ঘটত। কিন্তু কাউকে দেখতে না পেয়ে যুবতী বধূ ভাবতেন ‘ভূতে’র কাণ্ড। পড়শি সুরজ শেখই দেড়মাস ধরে ভূত সেজে এসব কাণ্ড ঘটাচ্ছিল। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ খাওয়াদাওয়া মিটিয়ে শুতে যাওয়ার সময় আচমকা ভেজানো দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ে পড়শি সুরজ। অভিযোগ, মুখ চেপে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। স্ত্রীর চিৎকারে ঘুম ভাঙে স্বামীর। তাঁর দাবি, ‘‘জাপটে ধরে আলো জ্বালতেই দেখি বিভৎস চেহারা। মুখে ময়দা, পাউডার মাখা। সারা শরীরে, মুখে কালি মাখা।’’ তবে কালি মুছতেই বেরোয় আসল চেহারা। থানায় দায়ের করা অভিযোগে বধূর দাবি, ‘পড়শিদের ডাকতেই ওই যুবক আমায় গুলি করে খুন করার হুমকি দিয়ে হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যায়।’ তখন হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যায় সে। পরে অবশ্য পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।