কলকাতা: বিপর্যয় বললেও কম বলা হয়৷ রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত চার কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে জেতা তো দূরে থাক, চারটি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রেই জামানত জব্দ হয়েছে গেরুয়া শিবিরের৷ ঘটনাচক্রে তার মধ্যে দুটিতে জয়ী হয়েছিল দল৷ স্বভাবতই, পরাজয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, ইভিএম বদলের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷
শুভেন্দুর দাবি ছিল, ‘‘বিভিন্ন বুথ থেকে আমাদের হাতে যা তথ্য আসছে, তাতে স্পষ্ট গণনায় শাসকদল কারচুপি করেছে। নচেৎ এই ফলাফল অসম্ভব। সব কেন্দ্রেরই ইভিএম পাল্টানো হয়েছে। সব বুথের ফলাফল হাতে আসুক তারপর আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’’ প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘একটা দল একাই ৮৬ থেকে ৮৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে?’ ইতিমধ্যে শাসক শিবির থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ধেয়ে এসেছে৷ নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ টেনে দাবার আড়াই চাল চেলেছেন ফিরহাদ, ‘তার মানে ইভিএমে গন্ডগোল আছে শুভেন্দু অধিকারী বলছেন৷ তাহলে ইভিএম নিয়ে নন্দীগ্রামে অনৈতিকভাবে জিতেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারী একথা মেনে নিচ্ছেন তো?’’ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন, ‘‘বিজেপি অফিশিয়ালি বলুক, ইভিএমে গোলমালের কথা৷ আমরা রাজি আছি৷’’
বিরোধী দলনেতার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে যখন শাসক শিবির থেকে পাল্টা চাপ তৈরির চেষ্টা চলছে, এহেন আবহে দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গিয়েছে উলটো সুর, ‘যিনি বলেছেন তিনি বলতে পারবেন! নিশ্চয়ই তার কাছে তথ্য আছে, তিনি সেই তথ্যের উপর নির্ভর করেই একথা বলেছেন।’’ দিলীপবাবুর এহেন মন্তব্যকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সব বিষয়ে মন্তব্য দিতে অভ্যস্ত দিলীপবাবু এবিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করে শুভেন্দুর পাশে দাঁড়াননি৷ বরং, ‘কিছুই বলব না’বলে আদতে শুভেন্দুর কোর্টে বল ঠেলে ‘তিনি সেই তথ্যের উপর নির্ভর করেই একথা বলেছেন’ আদতে ফিরহাদদের চ্যালেঞ্জকেই উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে৷ বস্তুত, দিলীপ-শুভেন্দুর ‘সম্পর্কে’র রসায়ন দলের অন্দরে কারও অজানা নয়৷ স্বভাবতই, শুভেন্দু অনুগামীরা মনে করছেন, সুযোগ বুঝে বিপদ বাড়ানোর পন্থাই নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ৷ বয়ান পাল্টা বয়ান নিয়ে স্বভাবতই চড়ছে জল্পনার পারদ৷ শুভেন্দুর অবশ্য পাল্টা কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷