কলকাতা: গতকাল শতাব্দী রায়ের ফ্যান ক্লাবের একটি ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে। সেখানে লেখা হয়, তিনি শনিবার দুপুরে নিজের সিদ্ধান্ত জানাবেন! এছাড়া বর্তমান দল নিয়ম অসন্তোষের কথা প্রকাশ হয়েছে সেই পোস্টে। এদিকে আজ দিল্লি যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। একপ্রকার শতাব্দী রায়কে বিজেপিতে স্বাগত জানিয়ে তিনি বললেন, তৃণমূলের সবাই থাকে লাঠি এবং পুলিশের ভয়ে। একই সুরে সুর মেলাতে বাধ্য হয়ে তারা।
শতাব্দী রায়ের ফ্যান পেজের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেসেরও দিশেহারা অবস্থা। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের অন্য এক সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন, তিনি এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না। শতাব্দী রায়ের এইরকম কোন ভাবনা আছে বলেও শোনেননি। তবে দিলীপ ঘোষ যে ধরনের মন্তব্য করেছেন তাতে ইঙ্গিত মিলছে হয়তো শতাব্দী রায়ের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা প্রবলভাবেই রয়েছে। দিলীপের সাফ কথা, তৃণমূল কংগ্রেসের সকলের মনের কথা প্রকাশ করতে পারেন না। তাই অল্প সুযোগ পেলেই সবাই নিজের কথা বলতে এগিয়ে আসেন। তৃণমূলের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এখানে প্রথম থেকেই কারুর মনোভাব এক নয়। লাঠি এবং পুলিশের ভয়ে সবাই এক সুরে কথা বলে। দিলীপ ঘোষের মন্তব্য এবং আজ শতাব্দী রায়ের দিল্লি যাত্রা, সবমিলিয়ে ফের দলবদলের আবহে ব্যাকফুটে চলে গেল তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, গতকাল ‘শতাব্দী রায় ফ্যানস ক্লাব’ পেজ থেকে গতকাল পোস্ট করা হয়, “২০২১ খুব ভালো কাটুক। সুস্থ থাকুন, সাবধানে থাকুন। এলাকার সঙ্গে আমার নিয়মিত নিবিড় যোগাযোগ। কিন্তু ইদানিং অনেকে আমাকে প্রশ্ন করছেন কেন আমাকে বহু কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। আমি তাঁদের বলছি যে আমি সর্বত্র যেতে চাই। আপনাদের সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগে। কিন্তু মনে হয় কেউ কেউ চায় না আমি আপনাদের কাছে যাই। বহু কর্মসূচির খবর আমাকে দেওয়া হয় না। না জানলে আমি যাব কী করে? এ নিয়ে আমারও মানসিক কষ্ট হয়। গত দশ বছরে আমি আমার বাড়ির থেকে বেশি সময় আপনাদের কাছে বা আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করতে কাটিয়েছি, আপ্রাণ চেষ্টা করেছি কাজ করার, এটা শত্রুরাও স্বীকার করে। তাই এই নতুন বছরে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি থাকতে পারি। আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ২০০৯ সাল থেকে আপনারা আমাকে সমর্থন করে লোকসভায় পাঠিয়েছেন। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনাদের ভালোবাসা পাব। সাংসদ অনেক পরে, তার অনেক আগে থেকেই শুধু শতাব্দী রায় হিসেবেই বাংলার মানুষ আমাকে ভালোবেসে এসেছেন। আমিও আমার কর্তব্য পালনের চেষ্টা করে যাব। যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিই আগামী ১৬ জানুয়ারি ২০২১, শনিবার দুপুর দুটোয় জানাব৷”