কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম শিবিরের ভরাডুবির অন্যতম প্রধান কারণ হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প কোনও নেতা বিজেপিতে না থাকা। বাংলা পদ্ম শিবির এখনও তৃণমূলের মূল কান্ডারী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিকল্প কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরতে ব্যর্থ, আর তার জেরেই দলের এই শোচনীয় হাল। বঙ্গের পদ্ম শিবিরের দুর্দশা ব্যাখ্যা করতে এবং দলের হারের কারণ বোঝাতে এই ভাষাতেই অকপট বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার সংবাদমাধ্যমকে দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজ্যে আমাদের ব্যর্থতা যে আমরা মানুষের কাছে এখনও পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প দিতে পারিনি। যেটা অন্য রাজ্যে পেরেছি। আর এখানেই আমাদের অক্ষমতা।’ দিলীপ ঘোষের এহেন বোধোদয়ে কার্যত উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। তাহলে কি পদ্মা শিবিরের কাছে গুরুত্ব হারানোর পর নিজের প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই গুণগান গাইতে শুরু করেছেন বঙ্গ বিজেপির সহ-সভাপতি? এমনটাই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।
উল্লেখ্য, বাংলার গত বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপি তো বটেই বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের শত চেষ্টার পরেও তৃণমূলের কাছে আরও একবার ধরাশায়ী হতে হয়েছে বিজেপিকে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত রাজ্যে এসে দু’শোর বেশি আসন দখলের দাবি করেছিলেন সেখানে বিজেপি ৭৭ আসনেই আটকে যায়। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয় বার নবান্ন দখল করে মমতা বাহিনী। দলের এত বড় ভরাডুবির কারণ ব্যাখ্যা করতে শনিবার দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যের মানুষের একটা দলকে বড় শক্তি দিতে চেয়েছে, যাতে সরকার ভালোভাবে কাজ করতে পারে। যে কারণে কেন্দ্রে মোদীজিকে ফের ক্ষমতায় এনেছিল সাধারন মানুষ।’ এ ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে দিলিপের বক্তব্য, ‘বাংলার মানুষের কাছে কোনও বিকল্প নেই। ছাই ফেলতে ভাঙ্গা কুলো তাই তৃণমূলই ভরসা। অর্থাৎ এক কথায় বঙ্গ রাজনীতিতে যে কার্যত গুরুত্বহীন পদ্ম বাহিনী শনিবার সেটাই রীতিমতো স্বীকার করে নিলেন দিলীপ ঘোষ।
তবে বঙ্গ বিজেপিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প না থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারেই সফল নয় বলে দাবি দিলীপের। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সুশাসক হতেন, তবে তাঁকে পুলিশ প্রশাসন লাগিয়ে ভোট লুট করতে হত না। বিরোধীদের অত্যাচার করে ঘরছাড়া করতে হত না।’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘রাজ্যে চলা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রীর অযোগ্যতার প্রমাণ। উনি গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি যোগ্য নন বলেই নন্দীগ্রামের মানুষ তাঁকে হারিয়েছেন।’