ঝড়ের ধাক্কা সামলাতে দিঘার সৈকতে বসছে বিশেষ গাছ

ঝড়ের ধাক্কা সামলাতে দিঘার সৈকতে বসছে বিশেষ গাছ

দিঘা: অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য গাছ৷ লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে দিঘার বিচ রোডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলি৷ পর্যটন শিল্পের কেন্দ্রস্থল দিঘার এই বিচ রোডের সৌন্দার্যায়নের পাশাপাশি এবার ঝড় প্রতিরোধে সক্ষম এমন গাছ লাগানোর কাজ শুরু করতে চলেছে রাজ্যের বন দফতর।দিঘা রেল স্টেশন থেকে পুলিশ হলিডে হোম পর্যন্ত বিচ রোড এলাকায় রি-প্ল্যান্টেশনের কাজ শুরু করা হবে। মূলত ভবিষ্যত ঘূর্ণিঝড়ের থেকে উপকূল চত্বরকে বাঁচাবার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য বন দফতরের মন্ত্রীরা। বিভাগীয় মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এক বছরের মধ্যেই এই কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। তাঁর কথায়, শুধু বৃক্ষরোপনই নয়, প্রতিদিন রক্ষণাবেক্ষণের দিকটাও মাথায় রাখা হবে। সৌন্দার্যায়নের পাশাপাশি ঝড়ের মোকাবিলায় সক্ষম গাছগাছালি লাগানোর কথাই ভাবা হয়েছে।

ঝড়ের মোকাবিলায় ঠিক কোন গাছ লাগাতে চলেছে বন দফতর সেই নিয়ে প্রশ্ন করায় তারা জানিয়েছেন, মূলত পাম প্রজাতির উদ্ভিদ ঝড়ের মোকাবিলায় সক্ষম। সেগুলি দিঘার জলবায়ু ও মাটির সঙ্গেও খাপ খায়। তাই এই প্রজাতির গাছের সঙ্গে জারুল, অর্জুন, নিম ইত্যাদি উদ্ভিদও বসানো হবে৷ উদ্যান বিভাগের আধিকারিক রাজু দাসের কথা অনুযায়ী, পাম প্রজাতির উদ্ভিদের সারফেস অঞ্চল এবং ক্যানপি সীমিত হওয়ায় এগুলি তীব্র ঝড় মোকাবিলায় সক্ষম। যেগুলি আম, জাম, কাঁঠাল-এর মতো গাছ করতে পারেনা।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে’র বোটানি বিভাগের অধ্যাপক কৃষ্ণেন্দু আচার্য জানান, পাম প্রজাতির উদ্ভিদগুলি যেমন- নারকেল, তাল, সুপারি ইত্যাদি গাছের কাণ্ডের ফাইবার শক্তিশালী হওয়ায় ঝড়ে প্রচণ্ড দোল খেলেও চট করে ভেঙে পরে না৷ এবং তাই হাওয়াকে আটকাতেও এগুলি অনেকটাই সক্ষম হয়। তাঁর মতে, এই প্রকল্পে পাম গাছগুলিকে তিনটি স্তরে লাগানো উচিত৷ উচ্চতায় ছোট, মাঝারি এবং লম্বা এই তিন সাড়িতে যদি পরপর লাগানো যায়, তাহলে তা হাওয়া আটকানোর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দনও হবে। বন দফতরের তরফে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই গাছগুলিকে মূলত কলকাতা থেকে আনা হচ্ছে, তাই প্রথম থেকেই সেগুলিকে যথেষ্ট নজরদারিতে রাখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 6 =