কলকাতা: বেলাগাম করোনা৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনজীবনে নিয়ন্ত্রণ টেনেছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু, কোথায় কী! করোনায় অকুতোভয় একাংশ৷ পুলিশি বজ্র আঁটুনির ফস্কা গেরোয় নিয়ম ভাঙার ছবি জেলায় জেলায়!
রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউনে হাওড়া ব্রিজের উপর চলছে পুলিশের নাকা চেকিং। সতর্কতামূলক প্রচারও চলছে। অন্যদিনের তুলনায় ফাঁকা রয়েছে হাওড়া ব্রিজ। এই সেতুর মাঝখানে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। একমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়িকেই ছাড়া হচ্ছে৷ অপ্রয়োজনে পথে বেরোনো ব্যক্তিদের কড়া হাতে ব্যবস্থা নিতেও দেখা গিয়েছে পুলিশকে৷
একেবারেই অন্য ছবি ধরা পড়ল লকডাউনের প্রথম দিনে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন শহরে৷ বারাসতে সাতসকাল থেকে লকডাউনে সব দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বাজার ঘাট-মুদিখানা ও সবজির দোকানে ভিড় ছিল একটু বেশি৷ মাছ ও মাংসর দোকানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো৷ প্রশাসন ও বাজার কর্তৃপক্ষের তরফে দূরত্ববিধি ও কোভিড প্রোটোকল মানতে মাইকে ঘোষণা করা হলেও জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব দেখা যায়৷ শারীরিক দূরত্ববিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাজারে ঘোরাফেরা করেন বহু মানুষ৷ তবে চাঁপাডালি মোড়, ডাকবাংলো মোড় বা কলোনী মোড় দশটার পরে শুনশান৷
করোনার ভয়ে খাঁ খাঁ দিঘা। বালুতট জনমানব শূন্য। স্নানের ঘাটেও লোক নেই। বন্ধ সৈকতের সার সার দোকান। হোটেলগুলিতেও লোক নেই। সৈকত শহরের নিস্তব্ধতা শুধু খানখান হচ্ছে অবিরাম ঢেউয়ের গর্জনে। গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ও শুনশান হয়েছিল দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণির সৈকত। দ্বিতীয় লকডাউনের ঢেউ আছড়ে পড়তেই ফিরল শুনশান সৈকতের ছবি। লকডাউন বিধি পালন করতে সকাল থেকেই এলাকায় চলে পুলিশের মাইকিং।
শহরতলী দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমা জুড়ে লকডাউনে রাস্তাঘাট ও বাজার সুনশান। বিশেষ করে ক্যানিং-১ ও ২, বাসন্তী, গোসাবা ব্লকের বাজার ঘাট সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ। তবে সকাল ৭ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত দোকানপাট চলে। তারপর যথা সময়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি ক্যানিং মাছের আড়ৎ , খুচরো মাছ বাজারগুলিও ছিল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ।
আগামী ১৫ দিন সকাল ৭-১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বাজার-দোকানপাট। এদিন ১০টা বাজতেই বাঁকুড়ার লালবাজারের সর্বত্র বাজার বন্ধ করার জন্য মাইকিং করে পুলিশ৷ রবিবারের তুলনায় আজ অনেকটাই ফাঁকা বাজার। মাইকে সতর্কতামূলক প্রচার করছেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। এছাড়াও বাঁকুড়ার সদর থানার ধলডাঙ্গা মোড়, সোনামুখী থানা এলাকা, তালডাংরা বাজার রবিবারের সকালে শুনশান৷ রাস্তার উপরেই কিছু ঠেলাগাড়িতে সবজি, ফল বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে। তবে সেখানেও ক্রেতার সংখ্যা বেশ কম৷ দোকান প্রায় সবই বন্ধ। গাড়ি চলাচলও ছিল খুব কম৷ তবে লকডাউনের প্রথম দিনে পুলিশি কড়াকড়ির বেড়াজাল কেটে বেরোতে অনেককেই নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিতে দেখা গিয়েছে। জরুরি পরিষেবার সাথে যুক্ত এমন ভুয়ো স্টিকার গাড়িতে লাগিয়ে অনেকে রাস্তায় নেমেছিলেন। এ দৃশ্য দেখা গিয়েছে, বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে। তবে হাসপাতালের ভুয়ো স্টিকার লাগানো ওই গাড়ি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। সকাল ১০টা বাজতেই পুলিশ নামে দেগঙ্গা বাজারে। বিনা কারণে রাস্তায় যাঁরা নেমেছিলেন তাঁদের ধরপাকড়ও করা হয়। এমন ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।