কলকাতা: ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এর আগেও বহুবার উঠেছে। ফের অভিযোগের তির টেট নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অধীনে প্রশিক্ষণ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীরা বঞ্চনার শিকার হলেও রাজ্যের বাইরের বোর্ড থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পর্ষদের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন বহু চাকরিপ্রার্থীর। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বৃহস্পতিবার একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেন তাঁরা। এমনকী, প্রয়োজনে অনশনেও বসবেন বলে তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে।
২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার মাধ্যমে ৪৩ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও কার্যক্ষেত্রে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এমনকী, হাইকোর্টে সেই সংক্রান্ত পর্যাপ্ত নথিও দাখিল করতে পারেনি শিক্ষা দফতর, এমনই অভিযোগ তুলেছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীরা। টেট উত্তীর্ণ ও প্রশিক্ষিত প্রার্থী স্বদেশ ঘোষ জানিয়েছেন, 'শিক্ষামন্ত্রী সংবাদমাধ্যমে ঘোষণা করেছিলেন প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের পরেই নিয়োগে প্রশিক্ষণরতদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, সেই অনুযায়ী সেই সময়ে একমাত্র ২০১৪-২০১৬ ও ২০১৫-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের দুটি ব্যাচই প্রশিক্ষণরত অবস্থায় ছিল। কিন্তু সরকারি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে পর্ষদ প্রশিক্ষণরতদের সুযোগ না দিয়ে প্রচুর অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী নিয়োগ করেছে।' তবে বাইরের বোর্ড থেকে যাঁরা ২০১৫-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, পর্ষদ তাঁদের নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পর্ষদের এই 'দ্বিমুখী নীতি'র বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার একদিকে মুর্শিদাবাদ জেলায় নিতাই সরকার, আশিক আহমেদসহ প্রায় ২০ জন প্রশিক্ষিত প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী জেলা ডিআই অফিসে তাঁদের বঞ্চনার কথা জানিয়ে স্বারকলিপি জমা দিয়েছেন। আর অন্যদিকে ২০১৫-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রশিক্ষিণ নেওয়া মোট ৩০০ জন টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিকট গণ-ইমেল করে বঞ্চিত প্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগপত্র দেওয়ার দাবি জানালেন।
প্রশিক্ষিত টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সংগঠক শংকর প্রসাদ খাঁ সাফ জানিয়েছেন, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে অনেক অনুনয়-বিনয় করে আমাদের বঞ্চনার কথা জানিয়ে আসছি এবং সমস্যার দ্রুত সমাধান করে প্রাথমিকে বঞ্চিত প্রার্থীদেরকে অবিলম্বে নিয়োগপত্র প্রদানের জন্য আর্জি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এতকিছুর পরেও যদি সরকার কোনো সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে আমরা অনশন, আন্দোলনের পথ বেছে নেব।'