কলকাতা: আশঙ্কা প্রথম থেকেই করা হয়েছিল যে করোনাভাইরাস তৃতীয় ঢেউয়ের কারণ হয়ে উঠবে ভাইরাসের ‘ডেল্টা’ প্রজাতি। আখেরে সেই দিকেই এগোচ্ছে পরিস্থিতি। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে দেশের ৩৫ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। এদিকে আরো উদ্বেগের বিষয় হল, সংক্রমণের নিরিখে গোটা দেশে চতুর্থ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। একদিকে দ্বিতীয় ঢেউ থেকে ধাপে ধাপে সুস্থ হওয়ার পথে এগোচ্ছে বাংলা আর ঠিক তখনই ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কার কালো মেঘ জমছে বাংলার আকাশে।
জানা গিয়েছে, দেশে ২৯ টি রাজ্য এবং ৭ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ‘ডেল্টা’ প্রজাতির সংক্রমণের হদিস মিলেছে ইতিমধ্যেই। বিগত কয়েক সপ্তাহের করোনাভাইরাস এর একাধিক প্রজাতির হদিশ মিলেছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল আলফা, বিটা, গামা। তবে এখন যে তথ্য মিলছে তাতে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে যে প্রজাতির ভাইরাস সবথেকে বেশি সংক্রামক হয়ে উঠেছে তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ এই ‘ডেল্টা’ প্রজাতির। তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে ১ হাজার ৩৯৭ জনের শরীরে এই প্রজাতির ভাইরাসের হদিস মিলেছে। আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র চারজন বিদেশ থেকে এসেছেন, বাকি সবাই এই রাজ্যের বাসিন্দা। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও দিল্লি থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্র, কেরল, পঞ্জাব, হরিয়ানা, সব রাজ্যে এই প্রজাতির ভাইরাস মিলেছে এবং সংক্রমণে প্রথম স্থান অধিকার করেছে দিল্লি! করোনাভাইরাস দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজধানীর কী অবস্থা হয়েছিল তা কারও অজানা নয়। দিল্লির পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের অবস্থাও ব্যাপক করুন হয়েছিল এবং এখনও নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে। তাই অবশ্যই ভাবে এই নতুন প্রজাতির ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণ কিছু কম নেই।
আরও পড়ুন- করোনায় আক্রান্তদের নির্জন দ্বীপে পাঠাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প!
এই প্রজাতির ভাইরাসের জন্য করোনাভাইরাস তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে, তবে সম্প্রতি এক গবেষণা দাবি করেছিল, এরপর হয়তো করোনার আর ভয়ানক রূপ দেখা যাবে না। করোনাভাইরাস নতুন প্রজাতির ‘ডেল্টা’র অস্ত্রের ধার শীর্ষ বিন্দুতে পৌঁছে গিয়েছে! অর্থাৎ এটাই হচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবথেকে ভয়ঙ্কর রূপ। তবে এরপর আর ভয়ঙ্কর হতে পারবে না এই ভাইরাস কারণ এই প্রজাতি তার সমস্ত শক্তি ব্যয় করে দেবে। বিগত এক বছর ধরে করোনাভাইরাস একাধিকবার নিজের রূপ পরিবর্তন করেছে এবং সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েছে। তবে এখন বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আরো একবার রূপ বদলের জন্য যতটা পরিমাণ স্পাইক প্রোটিনের পরিবর্তন দরকার ততটা ‘ডেল্টা’য় নেই। তাই এরপর করোনা আরো শক্তিশালী রূপ নিতে পারবে না বলেই মনে করছেন তারা।