দিনের পর দিন আদালতে ভর্ৎসিত হচ্ছে সিবিআই-ইডি! তাদের সাফল্যের হার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন!

দিনের পর দিন আদালতে ভর্ৎসিত হচ্ছে সিবিআই-ইডি! তাদের সাফল্যের হার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন!

cbi

নিজস্ব প্রতিনিধি: নিম্ন আদালত থেকে কলকাতা হাইকোর্ট, বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় সিবিআই এবং ইডির তদন্ত পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেই চলেছে। কেন তদন্ত এত ধীরগতিতে চলছে, কেনই বা মামলায় নাম জড়ানো সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিচারপতিরা। দেশ জুড়ে সিবিআই ও ইডির তদন্ত পদ্ধতি নিয়ে বহুদিন ধরেই কাটাছেঁড়া চলছে। কিছুদিন আগের কথা, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন মামলার তদন্তে নেমে ইডির সাফল্যের হার নাকি মাত্র ০.৫ শতাংশ।

সিবিআইয়ের অবস্থাও তথৈবচ বলে তৃণমূলের দাবি। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনায় সিবিআই ও ইডি তদন্ত করছে। কিন্তু তদন্তের গতি প্রকৃতি বহু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যেমন এখনও পর্যন্ত চুরি যাওয়া নোবেল প্রাইজ উদ্ধার হয়নি। সারদা-নারদা কাণ্ডে এখনও তদন্ত চলছে। কয়লা পাচার, গরু পাচার থেকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, যে গতিতে তদন্ত চলছে তাতে প্রশ্ন তো উঠবেই। সিবিআইয়ের একটি সূত্রে খবর, অফিসারের সংখ্যা কম থাকায় তদন্তের গতি বাড়ছে না। সেটাই যদি হবে তাহলে সিবিআইয়ে নিয়োগ হচ্ছে না কেন, সেটা নিয়েও প্রশ্ন থাকবে।

বছর তিনেক আগের কথা। একটি সূত্রে জানা যায় সিবিআইয়ের হাতে প্রায় দশ হাজারের কাছাকাছি মামলা ছিল। প্রায় দু’দশক ধরে নিষ্পত্তি হয়নি পাঁচশোর বেশি মামলার। পশ্চিমবঙ্গ এবং মহারাষ্ট্রে সিবিআইয়ের হাতে সবচেয়ে বেশি মামলা রয়েছে বলে কয়েক বছর আগে একটি পরিসংখ্যানে জানা যায়। কিন্তু সেগুলির কিনারা কবে হবে? আদৌ কি হবে? নাকি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই ধামাচাপা পড়ে যাবে? এই প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে।

মধ্যপ্রদেশ তথা দেশ জুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া ব্যাপম কেলেঙ্কারির  তদন্ত ২০১৫ সালে হাতে পেয়েছিল সিবিআই। সাত বছর তদন্ত চালিয়ে ২০২২ সালে সেই মামলায় সিবিআই পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। তখন প্রশ্ন ওঠে ব্যাপমের মতো পাহাড় প্রমাণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় মাত্র পাঁচ জন দোষী সাব্যস্ত হল? এই বিশাল কেলেঙ্কারিতে আর কেউ কী যুক্ত ছিলেন না? এই প্রশ্ন ওঠে সব মহল থেকে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত অফিসারের সংখ্যা কম থাকার কারণেই তদন্তের গতি বাড়ানো যাচ্ছে না। সেই কারণে মুখ পুড়ছে সিবিআইয়ের। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, সিবিআইয়ে বর্তমানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা প্রায় ৭৩০০।  সেখানে শূন্য পদের সংখ্যা ১৭০০  এর কাছাকাছি। জানা গিয়েছে শুধুমাত্র দুর্নীতির অভিযোগের ক্ষেত্রেই সিবিআইয়ের হাতে ৬৪৫টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ৩৫টিতে তদন্তের মেয়াদ পাঁচ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও সিবিআইয়ের হাতে মামলা আসার যেন বিরাম নেই। তবে কী সবকিছু এভাবেই চলতে থাকবে? সিবিআই ও ইডির সাফল্যের হার বাড়বে না? এই সমস্ত কথা শুনতে কী ভাল লাগে সিবিআই আধিকারিকদের? এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে সিবিআইয়ের শূন্যপদগুলিতে‌ নিয়োগ হয় কিনা, তদন্তের গতি বাড়ে কিনা, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =