কলকাতা: আলোর উৎসবের মাঝেই অন্ধকার নেমে এল শহরের দুটি পরিবারের৷ বাজির বলি এক শিশু সহ দুই৷ হরিদেবপুরে তুবড়ি ফাটাতে গিয়ে মৃত্যু হল ৫ বছরের এক শিশুর৷ অন্যদিকে, তুবড়ির খোল গলায় বিঁধে মৃত্যু হল কসবার এক বাসিন্দার৷
জানা গিয়েছে, নিজের পরিবারকে নিয়ে হরিদেবপুরের ৪২/৮ বিদ্যাসাগর সরণিতে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া ছিলেন পেশায় সিকিউরিটি গার্ড কাজল দাস৷ স্ত্রী ও ৫ বছরের ছোট্ট মেয়ে আদিকে নিয়ে সুখের সংসার তার৷ কালীপুজোয় আতসবাজি পোড়াবে ভেবে খুব খুশি ছিল ৫ বছরের আদি৷ তাই কালীপুজোর দিন সন্ধ্যা নামতেই ঠাকুমা, পিসিদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ির সামনেই বাজি পোড়ানোর আনন্দে মেতে উঠেছিল সে৷ একসময় ফুলঝুড়ির পাশাপাশি তুবড়িতে আগুনও দেয় আদি৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবার আগুন দেওয়ার পর তুবড়িটি না জ্বলায় ফের তাতে আগুন দিতে যায় শিশুটি৷ সেই সময়ই তুবড়িটি হঠাৎই ফেটে যায়৷
তুবড়ির খোলের একাংশ ছিটকে লাগে আদির গলায়৷ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি৷ হাসপাতালে আদির গলা থেকে তুবড়ির খোলের একাংশ বের করে দেওয়া হয়৷ কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ৷ এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও এক শিশু৷ ঘটনাস্থলেই দাঁড়িয়ে ছিল৷ তুবড়ির খোলের টুকরো তার চোখের পাশে এসে লাগে৷ জখম হয় সে-ও৷
অন্যদিকে, এদিন সন্ধ্যায় বাড়িতেই তুবড়ি জ্বালাচ্ছিলেন কসবা কে এন সেন রোডের বাসিন্দা দীপকুমার কোলে (৪০)৷ তুবড়ির ভাঙা টুকরো দীপকুমারের গলাতেও বিঁধে যায়৷ রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন৷ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই দীপকুমার কোলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কসবা এলাকায় একটি বইয়ের দোকান রয়েছে দীপকুুমারের৷
শব্দদানবের তাণ্ডব রুখতে কালীপুজো ও দীপাবলির আগে থেকেই শহরজুড়ে প্রচার চালিয়েছিল কলকাতা পুলিশ৷ কিন্তু, রবিবার রাত বাড়তেই দেখা গেল, সেই একই চিত্র৷ কলকাতার অনেক জায়গা থেকেই শব্দবাজি নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দফতরে৷ জানা গিয়েছে, আইন ভাঙায় গতকাল রাতে প্রায় সাড়ে সাতশো জনকে গ্রেফতার করা হয়৷ বাজেয়াপ্ত করা হয় নিষিদ্ধ বাজি৷