চেষ্টা থাকলে পতিত জমিতেও সোনার ফসল ফলানো যায়, দেখালেন ওঁরা

চেষ্টা থাকলে পতিত জমিতেও সোনার ফসল ফলানো যায়, দেখালেন ওঁরা

রানাঘাট: নদীয়া জেলায় ৩৪ নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে বহু দিন ধরে। দীর্ঘ একবছর আগে ৩৪ নং জাতীয় সড়ক অর্থাৎ বর্তমানে যা ১২ নং জাতীয় সড়ক। সেই জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত গতিতে চলছিল। বিভিন্ন জায়গায় কাজ শুরু হলেও এখনো কিছু কিছু জায়গায় সেরকমভাবে কাজ শুরু হয়নি। এমনই চিত্র ধরা পড়ল আমাদের ক্যামেরায়।

নদীয়ার হবিবপুর এলাকায় ৩৪ নং জাতীয় সরক সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার‌। তারপরই ঢাকঢোল পিটিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। সেই রাস্তায় অনেকদিন ধরে কাজ না হওয়ার কারণে রাস্তায় জমেছে জল। সেই রাস্তার মজা জলে হবিবপুর অঞ্চলের কিছু মানুষ সেই জমা জলকেই কাজে লাগিয়ে ধান চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যেমন সিদ্ধান্ত, তেমনি কাজ।

তারা রাস্তার ধারে সরকারি অধিগ্রহণকৃত জমিতে ধান গাছ এবং পানিফলের  চাষ শুরু করেছিলেন। না, বিক্রির উদ্দেশ্যে নয় বরং নিজেদের খাওয়ার জন্য। যেহেতু রাস্তার পাশে জমি রয়েছে, আর সেখানে জল জমে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে এবং তার সাথে অকাল বর্ষণ। তাই ওই অঞ্চলের মানুষের চাষ করতে সুবিধা হবে এই বিশ্বাস থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়া। আর সেই জমা জলকে তারা কাজে লাগালেন এবং তার সাথে সাথে তারা সেখানে ধান বুনলেন, সেইসঙ্গে চাষ করলেন পানিফলের। স্বভাবতই এই চাষের পরে তাদের মনে অনেকটাই শান্তি। তার কারণ, তাদের সেই জমিতে সোনার ফসল ফলেছে।

পাশাপাশি তারা জানাচ্ছেন যে লকডাউনের মধ্যে আয় একদমই নেই। সুতরাং এই চাষের মাধ্যমে যদি কিছু খাবার উঠে আসে তাহলে খুবই ভালো হয় এবং সংসারও চলে। স্বভাবতই দু-তিনটি পরিবার থেকে শুরু করে প্রায় আড়াইশোটি পরিবার এখানে দুঃস্থ এবং অসহায়। সে কারণেই এলাকার মানুষ রাস্তার ধারে এহেন এক অভিনব চাষ করে তাক লাগিয়েছেন। তবে তাদের একটাই কথা, যতদিন না রাস্তা চলছে ততদিন তারা এই কাজ চালিয়ে যাবেন। রাস্তা যখন শুরু হয়ে যাবে তখন তো আর চাষ করতে পারবেন না। তাই অকালে এইরকম ভাবে চাষ করে তারা নিজেদের মনকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। চেষ্টা থাকলে পতিত জমিতেও সোনার ফসল ফলানো যায়। তাদের এই উদ্যোগ কে সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − two =