মিটিংয়ে স্বামীর পাশে সন্তান কোলে 'কমরেড' স্ত্রী! প্রচারে বিমুখ CPIM-এর ‘ভাইরাল কর্মী’

কলকাতা: দমদম পাতিপুকুরের এসকে দেব রোড৷ আর পাঁচটা সন্ধ্যার মতোই এদিনও ছিল ছিমছাম৷ তারই মাঝে মাইক হাতে পথ চলতি মানুষকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি বোঝাতে ব্যস্ত এক তরুণ বাম কর্মী৷ তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে গুটিকতক শ্রোতা৷ গণশক্তি বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অকাট্য যুক্তি সাজিয়ে চলেছেন তিনি৷ এমন ছবি তো আকছাড়৷ কিন্তু কোথাও যেন তা ব্যতিক্রমী হয়ে উঠল সন্তান কোলে শ্রোতার আসনে তাঁর স্ত্রীর অবস্থান৷ যেন অস্ফুটে কেউ বলে গেল, ‘মিছিলেই হোক প্রেম৷ ভেঙে যাক মোহ। তুমি সাজো ব্যারিকেড, আমি বিদ্রোহ।'

আরও পড়ুন- জাল নথিতে ভরে গিয়েছে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, তদন্তে নেমে চোখ কপালে প্রশাসনের, বাতিল বহু আবেদন

তরুণ বামন কর্মী পরিবারের এই ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল৷ জানা গিয়েছে, ওই সিপিএম নেতার নাম রাহুল ভট্টাচার্য। তিনি দক্ষিণ দমদম এরিয়া কমিটির সভাপতি। তাঁর স্ত্রী বিদিশা ভট্টাচার্যও দলেরই একনিষ্ঠ কর্মী৷ দলের কাজে স্বামীকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে এসেছেন তিনি৷ এদিন ধরা পড়ল তারই ছবি৷ যে দেখে অভিভূত নেটপাড়া৷ না কোনও বিশেষ দলের প্রতি সমর্থন নয়৷ বরং স্বামীর পাশে স্ত্রীর এই দৃঢ় অবস্থান প্রশংসা কুড়িয়েছে নেটিজেনদের৷ সংসার সামলে, সন্তানকে কোলে নিয়ে তিনি যে ভাবে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা প্রশংসাযোগ্য৷ বামপন্থী এই দম্পতির কথা ফিরছে সোশ্যাল সাইটে৷ তাঁদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন পার্টি দরদীরাও। এই ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে অনেক ইউজারই লিখছেন, 'ট্রু কমরেডশিপ'৷ 

যদিও প্রচারের আলো চান না রাহুল৷ তাঁর কথায়, ''আমার থেকেও অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে বহু পার্টি কমরেড কাজ করছেন। দলের জন্য জীবন দিয়ে লড়ছেন। অনেকেই হুমকি পেয়েছেন, ঘরছাড়াও হয়েছেন। তাঁরাও স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে নিয়েই পার্টি করছেন। আমি  তাঁদের কাছে তুচ্ছ।'' তিনি আরও বলেন,  ''আমাদের কমিউনিস্ট পার্টিতে আত্মকেন্দ্রিকতার কোনও জায়গা নেই। আমি নিজেও নারসিসিস্ট নই।'' 

জানা গিয়েছে, সেই ১৭ বছর বয়স থেকে পার্টির সদস্য রাহুল৷ তবে থেকে পার্টিই তাঁর কাছে সব৷ আর স্বামীর কাছে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে চলেছেন স্ত্রী বিদিশা৷ ১০ মাসের সন্তানকে কোলে নিয়েই দলের কাজ করে চলেছেন তিনি৷ এই ছবিটি লেন্সবন্দি করেন তাঁদের দলেরই কোনও এক সদস্য৷