শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তকে ফাঁসি সাজা শোনাল আদালত

কলকাতা: ঘুমন্ত শিশুকন্যাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে খুনের ঘটনায় ধৃত সুরেশ পাসোয়ানকে বৃহস্পতিবার ফাঁসির সাজা শোনালেন কলকাতা নগর দায়েরা আদালতের মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল । মঙ্গলবারই তিনি সুরেশকে পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করেন । বৃহস্পতিবার মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল, এই ঘটনাকে বিরলতম বলে বর্ণনা করে চূড়ান্ত সাজা ঘোষণা করেন । আজ ৬

শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তকে ফাঁসি সাজা শোনাল আদালত

কলকাতা: ঘুমন্ত শিশুকন্যাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে খুনের ঘটনায় ধৃত সুরেশ পাসোয়ানকে বৃহস্পতিবার ফাঁসির সাজা শোনালেন কলকাতা নগর দায়েরা আদালতের মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল । মঙ্গলবারই তিনি সুরেশকে পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করেন । বৃহস্পতিবার মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল, এই ঘটনাকে বিরলতম বলে বর্ণনা করে চূড়ান্ত সাজা ঘোষণা করেন । আজ ৬ বছর পর সুবিচার পেয়ে খুশি নিহত শিশুর পরিজনরা ৷ ২০১৩ সালের ২১ জুলাই রাতে ঘটে ওই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে খিদিরপুরে । হেস্টিংস থানার কাছে খিদিরপুর ব্রিজের ফুটপাতে শুয়েছিল আড়াই বছরের ওই শিশুটি ৷ ফুটপাথে দিদার সঙ্গে ঘুমোতে যায় সে । সেখান থেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে তুলে নিয়ে যায় সুরেশ পাসোয়ান । মাঝরাতে ঘুম ভেঙে নাতনিকে খুঁজে পাননি বৃদ্ধা । খবর দেন পুলিশকে । বাচ্চাটিকে খুঁজতে সারারাত শহর তোলপাড় করে ফেলে এলাকাবাসীও । পরেরদিন ২২ জুলাই ভোরবেলা ভিক্টোরিয়ার কাছে রেসকোর্সের একটি পরিত্যক্ত জলাশয় থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির দেহ । ময়নাতদন্তের পর পুলিশ জানায়, ধর্ষণ করা হয়েছে শিশুটিকে । তারপর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাকে ।

এই ঘটনার পরই অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা-সহ পকসো আইনের বিশেষ ধারায় মামলা দায়ের করে হেস্টিংস থানার পুলিশ । পরে ঘটনার তদন্তভার নেয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা । প্রথম থেকেই সন্দেহভাজন হিসেবে বারবার উঠে আসে রেসকোর্সের ঘোড়ার সহিস সুরেশ পাসোয়ানের নাম । বিহারের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে । হোমিসাইড শাখার তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, জেরায় অপরাধ স্বীকার করে সুরেশ । এরপরেই শুরু হয় মামলা । প্রায় ছ’বছর ধরে এই মামলার শুনানি চলে ৷ পুলিশ আদালতে চার্জশিট পেশ করে । এরপর নির্দিষ্ট ধারায় চার্জ গঠন করে শুরু হয় মূল মামলার বিচার । মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত ৷ আজ আদালতে এই মামলার সরকারী আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় জানান, ‘এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের সার্জেন ৷ যিনি শিশুটির ময়নাতদন্ত করেছিলেন ৷ রায় দানের ক্ষেত্রে ওই সাক্ষ্য বিরাট কাজে লেগেছে’ ৷ এর আগে দু’বার মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছিল । শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করেন নগর দায়েরা আদালতের বিচারক ৷ সুরেশ পাসোয়ানকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ ,অর্থাৎ অপহরণ ধারায় আট বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, ৩৭৬-এ ধারায় কুড়ি বছরের কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা, পকসো আইনে আট বছরের কারাদণ্ড এবং ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে ৷ মাত্র আড়াই বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলেও উল্লেখ করেন বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল ৷ যদিও সুরেশ পাসোয়ানের আইনজীবী কৌশিক চৌধুরী দাবি করেছেন তাঁর মক্কেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে । কলকাতা হাইকোর্টে এই রায়ের পুন: বিবেচনার আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *