কলকাতা: করোনা রুখতে কতটা জরুরি লকডাউন? সহজ ভাবে বোঝাতে চাইলেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার৷ বাংলার একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, “ধরে নেওয়া যাক, করোনা একটি সাপের মতো৷ বাইরে বেরোলেই সেই সাপ ছোবল মারবে৷ আমরা যদি ঘরে নিজেদের আটকে রাখতে পারি তাহলে সেই ছোবলের হাত থেকে আমরা কিছু দিনে রেহাই পেতে পারি৷’’ তাঁর মতে এই সহজ বিশ্লেষণ লকডাউনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন৷
লকডাউন ছাড়া কোনও উপায় নেই৷ লকডাউন কমপক্ষে ১৪ দিনের জন্য করা প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন তিনি৷ দেশবাসীর কাছে তাঁর অনুরোধ, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে না বেরোনোর জন্য৷ তাঁর মতে বর্তমানে দিন প্রতি করোনা আক্রমণের যে সংখ্যা দেখা যাচ্ছে, তা কিছুই নয়, ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে দাবি করেন তিনি৷ তাঁর মতে, দিনে দিনে টেস্ট যত বাড়বে, ততই করোনা আক্রান্তের সংখ্যার গ্রাফ উপরের দিকে উঠবে৷ আর এভাবে চলতে থাকলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে বাধ্য৷ এখনই হাসপাতালে বেড পাওয়া যাচ্ছে না৷ ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি চিন্তিত৷
তাঁর মতে, আজ না হোক কাল লকডাউন জারি করতেই হবে৷ এটা করে করোনাকে আটকে দেওয়া না গেলেও রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বাঁচানো যাবে না৷ তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন রাজ্যে ১৩০০ থেকে ১৪০০ করে মানুষ করোনার শিকার হচ্ছেন৷ ১৪ দিন ধরে ভর্তি থাকছেন হাসপাতালে৷ লকডাউন করলে হাসপাতালে ভর্তির এই হারকে কিছুটা আটকানো যেতে পারে৷ নয়তো মোকাবিলা করা মুশকিল বলে জানান তিনি৷
তিনি বলেন, দু-তিনটে করে ভেন্টিলেটর বাড়িয়ে কোনও লাভ হবে না৷ বরং রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে করোনা বেড করতে হবে৷ মাথায় রাখা দরকার, করোনা ছাড়াও ক্যানসার-স্ট্রোক ইত্যাদি রোগীদেরও ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়৷তাঁর মতে, আরেকটি বড় বিষয় ডিসচার্জ রেট, প্রতিদিন কতজন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তার নিরিখে কতজন সেরে উঠছেন এর পরিসংখ্যান হল সুস্থতার হার৷ কিছুদিন আগে এই পরিসংখ্যান ছিল ৬৫ শতাংশ, বর্তমানে তা নেমে ৬০ শতাংশে ঠেকেছে৷ লকডাউন করলে এই রেট ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলে দাবি করেন তিনি৷ তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে এই পদক্ষেপ আমাদের নেওয়া জরুরি৷ করোনা এখনই বিদায় নেবে না৷ আগুনের ওপর দিয়ে আমাদের হাঁটতে হবেই। আশা করছি ভ্যাকসিন খুব শীঘ্রই বাজারে আসবে।”