গাইঘাটা: এইচআইভি আক্রান্ত গৃহবধূকে মিডডে মিলের রান্না করতে বাধা অভিভাবকদের, স্কুলে প্রতিনিধি দল এসেও মিটল না সমাধান।ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনা গাইঘাটা থানার আংড়াইল মানবত বিদ্যাপীঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
বাবা লোকনাথ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ফেব্রুয়ারি ১ তারিখ থেকে রান্না করার নির্দেশ আসে।এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা বিথীকা বসু এইচআইভি আক্রান্ত এই কারণে তাকে রান্না করতে বিরোধিতা করে অভিবাবকদের একাংশ।বিথীকা বসু বিডিওর দ্বারস্থ হয় এবং উত্তর ২৪ পরগনা নেটওয়ার্ক ফর পিউপিল লিভিং উইথ এইচআইভি এইডস সংগঠনের কাছে আবেদন করেন তিনি। এদিন স্কুলে রান্নার জন্য এলে অভিভাবকদের সকলেই তাঁকে রান্না করতে বাধা দেন।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বনগাঁ মহাকুমা লিগ্যাল সার্ভিস বনগাঁ হাসপাতালে আইসিটিসি কাউন্সিলর ও নেটওয়ার্ক ফর পিউপিল লিভিং উইথ এইচআইভি এইডস সংগঠনের থেকে অভিবাবকদের বোঝাতে স্কুলে গিয়ে বৈঠক করেন। কিন্তু তাতে কোনও ফল মেলেনি। অভিভাবকদের দাবি এইডস আক্রান্ত মহিলা রান্না করলে তাদের শিশুরা সেই খাবার খাবে না।সংগঠনের কর্মকর্তারা পরবর্তীতে প্রশাসনের কাছে সবিস্তারে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
বিথীকা বসু ২০১৪ সাল থেকে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার পরেই তার স্বামীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় এর পরও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর দাবি তাকে কেন রান্না করতে দেওয়া হবে না। রোগাক্রান্ত মানে তো রান্না করলে সেই রোগ রান্না করা খাবারে যাবে না। মানবতা বিদ্যাপীঠের অমানবিক ঘটনায় হতাশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে প্রশাসক সকলেই।শিল্পী ইন্দ্রজীৎ পোদ্দার জানান, উত্তর চব্বিশ পরগনায় ৪৩৫ জন শিশুর এইচআইভি রোগে আক্রান্ত।আমি প্রত্যেক রোগীদের দেখভাল করি।আমি প্রত্যেকের সঙ্গে একটি থালায় বসে এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করি।
এই রোগ ছোঁয়াচে রোগ নয়। অবৈধ যৌনমিলন, এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর সিরিঞ্জ ব্যবহার, রক্ত সহ মুলত চারটি কারন থেকে এই রোগ সমাজের বুকে দ্রুত ছড়াতে পারে। তাই রোগীদের সঙ্গে সমাজের মানুষের ভালোবাসা দিয়ে ভালো ব্যবহার না করলে এই রোগ মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। বরং এই রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ফলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এই রোগ।তাই ঐ মহিলা রান্নার কাজের সহযোগিতার মধ্যে দিয়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরলে এভাবেই প্রত্যেককেই সমাজের বুক থেকে এই রোগমুক্তি সম্ভব।তাছাড়া রান্নার সঙ্গে এই রোগের কোন সম্পর্ক নেই। শিল্পী ইন্দ্রজিৎ বাবু অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার এই ধরনের রোগীর সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন তাহলে মহিলার সংসার বাঁচবে মহিলাও বাঁচবে এবং আগামী দিনে রোগ মুক্ত হবে।