কলকাতা: একটা রহস্য যার কোনও সমাধান এখনও হয়নি। শুধু তর্ক আর তর্ক। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে যুক্তি দিচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে যেন এক ধারায় বয়ে চলেছে জল। কিন্তু এর সমাধান কোথায়? কোনও সমাধান নেই বরং যত সময় এগোচ্ছে তত বেশি জটিলতা এবং বিতর্ক যেন বাড়ছে। কথা হচ্ছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে নিয়ে। সত্যিই কি ১৮ অগস্ট ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন তিনি? উত্তরে কেউ বলবে হ্যাঁ, কেউ বলবে না। তাই বিতর্ক থাকছেই। আর এরই মাঝে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন।
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন বেআইনি! জানিয়ে দিল হাই কোর্ট
নেতাজি রাশিয়াতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তা দেশের কমিউনিষ্ট পার্টি জানত, কিন্তু তাদের নেতারা এই বিষয় নিয়ে কিছুই বলেননি, মুখ বুজে থেকেছিলেন! এমনই দাবি করে শোরগোল সৃষ্টি করেছেন জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। দাবি করে বলা হচ্ছে, যে বিমান দুর্ঘটনার কথা সকলে জানেন তা আদতে মিথ্যে। তৎকালীন কিছু কংগ্রেস নেতা এই ঘটনাকে সত্যি প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল এবং তার সুরে সুর মিলিয়েছিল দেশের কমিউনিষ্ট পার্টি। এক্ষেত্রে আবার সবথেকে বড় যার নামে অভিযোগ উঠে আসে তিনি আর কেউ নন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু। তিনি নাকি নেতাজির মৃত্যুকে প্রতিষ্ঠিত সত্য হিসেবে প্রচার করতে চেয়েছিলেন। আসলে দাবি করা হয়, নেতাজি যে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে ছিলেন তা বিলক্ষণ জানতেন নেহরু এবং তাঁর খোঁজে তিনি সেখানে সফর করতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু স্ট্যালিনের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, স্ট্যালিনের সঙ্গে নেহরুর সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না এবং দেশের কমিউনিষ্ট পার্টিকেও তিনি খুব একটা পছন্দ করতেন না। এই কারণে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত নেহরুর সোভিয়েত সফর হয়নি এবং স্ট্যালিনও কোনও দিন ভারত সফর করেননি। মূলত, নেতাজি সম্পর্কে বিশদ ভাবে জানতে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের দিক থেকে প্রচার করতে যে নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন, এই দুই কারণে নেহরু সেদেশে যেতে চেয়েছিলেন বলে দাবি ওঠে। কমিউনিষ্ট পার্টিও বিষয়টি সম্পর্কে পূর্ণ অবগত ছিল। দাবি করা হয়, ১৯৫১ সালে একবার কমিউনিষ্ট পার্টির নেতারা সোভিয়েতে গিয়েছিলেন এবং তখন স্ট্যালিনের সঙ্গে আলোচনায় বারবার উঠে এসেছিলেন নেতাজির আশ্রয় প্রসঙ্গ। কিন্তু নেহরু কোনও দিন চাননি নেতাজিকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে।