কলকাতা: ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগ মোকাবিলায় চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের উপরে নজরদারি ও তদারকি করতে রাজ্য সরকার একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। কুড়ি সদস্যের এই কমিটি চিকিৎসায় সব ধরনের সরকারি নির্দেশিকা মানা হচ্ছে কিনা তার উপরে নজরদারি রাখবে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। রোগের চিকিৎসায় স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা ভাবা হয়েছে। উল্লেখ্য, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর ইতিমধ্যেই একটি নির্দেশিকা জারি করে সবাইকে তা মেনে চলার কথা বলেছে।
ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমাইকোসিসকে মহামারী ঘোষণা করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রত্যেক রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছে মহামারী ঘোষণা করার জন্য। এর পাশাপাশি প্রত্যেক রাজ্য থেকে এই রোগের তথ্য সংগ্রহ করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গে এই রোগে ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক জন। তার মধ্যে আজই বাংলায় তথা কলকাতায় প্রথম মৃত্যু হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণে। প্রাণ হারিয়েছেন হরিদেবপুরের বাসিন্দা শম্পা চক্রবর্তী নামের এক গৃহবধূ। বেশ কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ছিলেন তিনি। জানা যায় পরবর্তী ক্ষেত্রে তিনি আক্রান্ত হন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলছিল তার কিন্তু আদতে শেষ রক্ষা হল না। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় শম্পার। এই প্রথম কলকাতায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণে মৃত্যু হল কারোর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই মহিলা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন এবং বেশ কয়েকদিন ধরে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল তাকে। চিকিৎসাধীন থাকাকালীনই তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণে আক্রান্ত হন।
অন্যদিকে আবার, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের পাশাপাশি হোয়াইট ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে দেশে। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চেয়েও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এটি! জানা গিয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শুধুমাত্র মুখের আশপাশের অঙ্গগুলিতেই হয়। কিন্তু হোয়াইট ফাঙ্গাস খুব দ্রুত অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। ফুসফুস, যকৃৎ, বৃক্ক, যৌনাঙ্গ— সমস্ত অঙ্গই অত্যন্ত দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাসে। মূলত নখের মাধ্যমে ছড়ায় এটি এবং গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণে মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি। হোয়াইট ফাঙ্গাসের সংক্রমণে মৃত্যুর হার সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট কোনও ধারণা নেই।