রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে দিতে হবে টাকা! অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে টোল ট্যাক্স আদায় জেলা পরিষদের!

রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে দিতে হবে টাকা! অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে টোল ট্যাক্স আদায় জেলা পরিষদের!

 

বাঁকুড়া: রাজ্য পূর্ত দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন রাস্তার উপর অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে, রীতিমতো রেট চাট লাগিয়ে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নামে জোর করে চলছে ‘টোল ট্যাক্স’ আদায়। কোতুলপুরের তালকোড়ার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এমনকি জেলা পরিষদের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

কোতুলপুর ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে স্পষ্ট দাবি করা হয়েছে, পূর্ত দপ্তর যে রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করে সেই রাস্তায় জেলা পরিষদ টোল আদায় করতে পারে না। এটা আইন ও নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ। সংগঠনের অন্যতম সদস্য শিবশঙ্কর কুণ্ডু বলেন, কোতুলপুর-ইন্দাস ও কোতুলপুর-লাউগ্রাম ভায়া খাঁদিঘী রাস্তা পূর্ত দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন । কিন্তু ওই রাস্তার উপরে জেলা পরিষদ টোল আদায় করতে পারে না। জেলা পরিষদ শুধুমাত্র তার রাস্তার উপরেই টোল নিতে পারে। এখানে আইন ভেঙে সেই কাজই করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী ট্রাক চালক সুনীল রুইদাস, শেখ হাবিলরা বলেন, পূর্ত দপ্তরের রাস্তা বলেই আমরা জানি। তারপরেও বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নামে জোর করে টোল আদায় করা হচ্ছে। আর টাকা না দিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লরি দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে৷ টোল আদায়ের সঙ্গে যুক্ত শেখ আরিফ নামে এক কর্মী বলেন, আমরা একটি সংস্থার হয়ে এই কাজ করছি। তবে জেলা পরিষদের নামে তারা রসিদ দিচ্ছেন বলে স্বীকার করেন। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি ছাড়া সব পণ্যবাহি গাড়িতেই তারা টোল আদায় করছেন বলে তিনি জানান।

ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশানের অভিযোগের সত্যতা মিলল ওই রাস্তার উপর একটি বোর্ডে৷ তাতে স্পষ্ট লেখা আছে, ‘this  bridge is maintained by P.W.D. Govt of W.B’ । আর ওই টোল আদায়ের রসিদে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পাশাপাশি ‘এজেন্সি মেসার্স এস. নন্দী’ও লেখা রয়েছে। এই অবস্থায় পূর্ত দপ্তরের রাস্তায় জেলা পরিষদ এজেন্সি নিয়োগ করে কিভাবে টোল আদায় করতে পারে এই প্রশ্নটাই এখন কোতুলপুরে জোরালো হচ্ছে।

কোতুলপুরের বিধায়ক হরকালী প্রতিহারের দাবি, পূর্ত দপ্তরের রাস্তায় জেলা পরিষদ টোল আদায় করতে পারে না। শাসক দলের মদতে এই কাজ হচ্ছে ও আদায়কৃত টাকা শাসকদলের ঘরেই যাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।  বাঁকুড়া জেলা পরিষদের ‘মেন্টর’ ও তালডাংরার বিধায়ক অরুপ চক্রবর্তী বলেন, জেলা পরিষদ যেখানে যেখানে টোল আদায় করে সেখানে টেণ্ডার করেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে পূর্ত দপ্তরের রাস্তায় টোল আদায় নিয়ে কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + three =